বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

ভ্যাটকাণ্ডে সংস্কার লাগবে না?

মোস্তফা কামাল :   রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪ 12693
ভ্যাটকাণ্ডে সংস্কার লাগবে না?

কিসে কতো ভ্যাট আছে, আর কিসে নেই? জানা-বোঝা বড় কঠিন। বিপদে বা আপদে না পড়লে সবাই মালুম করতে পারেন না। আয়কর আইনজীবী বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-বোর্ড-এনবিআর কর্মকর্তাদেরও মুখস্থ থাকে না। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র না দেখে কিছু বলতে পারেন না। সাধারণ মানুষের ঠেলায় না পড়লে কি বোঝা সম্ভব?

সাধারণ মানুষ না বুঝলেও এক ধরণের সমঝোতায় ব্যবসায়ীরা বুঝে ফেলেন। কাজও সেরে নেন তারা। পৃথিবীর কোথাও এমন স্তরভিত্তিক ভ্যাট হার নেই। তাদের  পণ্য বা সেবাভিত্তিক একাধিক ভ্যাট হার ঠিক করাই থাকে। আমাদের স্তরভিত্তিক ভ্যাট হার বেশ অসামঞ্জস্যপূর্ণ। ব্যবসায়ীরা রেয়াত নিতে না পারলে এটি আবগারি শুল্কের মতো কায়-কারবার আছে। রেয়াতের টাকা কীভাবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে পরিষ্কার চিত্র না থাকলেই বা কী?

কোনো প্রতিষ্ঠান ১০০ টাকার কাঁচামাল আমদানি করতে গিয়ে ১৫ টাকা ভ্যাট দিলো। দাম পড়ল ১১৫ টাকা। উৎপাদক ১২০ টাকায় পণ্যটি তৈরি করলো। সেখানে ১০ শতাংশ হারে ১২ টাকা ভ্যাট দিলো। এরপর ওই একই উৎপাদক যখন খুচরা পর্যায়ে ১৪০ টাকায় পণ্যটি বিক্রি করবে, তখন ভোক্তার কাছ থেকে ৭ টাকা আদায় করে সরকারের কাছে জমা দিতে হবে। কিন্তু ওই উৎপাদক যখন ১২ টাকা রেয়াত চাইবে, তখন সরকারকে ৭ টাকা তো দিতেই হবে না, বরং আরো ৫ টাকা পাবে। আর ব্যবসায়ীরা রেয়াত চাইলে নানা কথা বললেও সরকারকে শেষতক পকেট থেকে হলেও সেটা না দিয়ে উপায় থাকে?

সরকারের পক্ষে ভ্যাটের রেয়াতের টাকা ফেরৎ দেওয়া সম্ভব না হলে সেটা আবগারি শুল্কে চলে যায়। সাধারণ মানুষের এই সুযোগ নেই। বরং ঝক্কি আছে। তাই কিভাবে দেয়া না যায়- সেই চেষ্টায় থাকে তারা। কিন্তু, সরকার চায় করদাতার সংখ্যা বাড়াতে। ব্যাপারটা কি সাংঘাতিক সাংঘর্ষিক হয়ে গেলো না? যুক্তরাষ্ট্রে বার্ষিক আয় সাড়ে চার হাজার ডলার (বার্ষিক মাথাপিছু সাড়ে ৭ শতাংশ) হলেই কর দিতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব নাগরিক এখন করের আওতায় চলে এসেছে। আমাদের হয় না কেনো?

বাংলাদেশে ভ্যাট চালু হয়েছে ৩৪ বছর প্রায়। অথচ ভ্যাটের ফের এখনো অজানা। বিএনপি ১৯৯১ সালে ভ্যাট চালু করে। তখন খাদ্য, নিত্যপণ্য, কমদামের শাড়ি, গামছার ওপর ভ্যাট ছিলো না। সেলস ট্যাক্স উঠিয়ে ভ্যাট চালু করায় দোকানে পণ্য খরিদের সময় ভ্যাট নেয়াও হতো না তখন। সেই সময়ের বিরোধীদল আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি এর তীব্র বিরোধিতা করে। অথচ ১৯৯৬-তে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দোকান পর্যায়ে সীমিত ভ্যাট চালু করে। এরপর ২০০১-এ পুনরায় বিএনপি ক্ষমতায় এসে চাল, ডাল, তেল, নুন ছাড়া দোকানের বাদবাকি অন্য সব পণ্যের ওপর ভ্যাট বসিয়ে দেয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ ‘সরবরাহসহ সবধরণের সেবাখাতে’ ভ্যাট বসায়। এমন কি হাসপাতালের রোগীদের খাদ্যকেও ছাড় দেয়নি। কী দাঁড়ালো ব্যাপারটা? চারদিকে এখন সংস্কারের আওয়াজ। ভ্যাট-ট্যাক্স নিয়ে কোনো আওয়াজ আছে?

লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন, ঢাকা।

Facebook Comments Box

Comments

comments

Posted ৫:৪৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

America News Agency (ANA) |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

 

Editor-in-chief :

Sayeed-Ur-Rabb

 

Corporate Headquarter :

44-70 21st.# 3O1, LIC. New York-11101. USA,

Phone : +6463215067

E-mail : americanewsagency@gmail.com

Copyright © 2019-2024Inc. America News Agency (ANA), All rights reserved.ESTD-1997