তুহিন আহমদ পায়েল : | সোমবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | প্রিন্ট | 1445 বার পঠিত
আকাশে সাদা-কােলা মেঘের ভেলা। চারপাশ ঘেরা অসংখ্য গাছপালা। চলছে সবুজের খেলা। ঘুরে আসতে পারেন হাজার বছর আগের শহর থেকে। বাংলার ঐতিহাসিক রাজধানী মহাস্থান গড় ঘুরে ইতিহাস জানতে পারেন। বগুড়া শহর থেকে মাত্র ১৩ কি.মি. দূরে অবস্থিত এই মহাস্থান গড়। প্রাচীন এই পর্যটন কেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষণ হাজার বছর আগের নানা নির্দশন।
মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি। প্রসিদ্ধ এই নগরী ইতিহাসে পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর নামেও পরিচিত ছিল। এক সময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানী ছিল।
প্রাচীর বেষ্টিত এই নগরীর ভেতর রয়েছে বিভিন্ন আমলের প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন। কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত এ স্থান পরাক্রমশালী মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন শাসক বগ্রের প্রাদেশিক রাজধানী ও পরবর্তীকালে সামন্ত রাজাদের রাজধানী ছিল। তৃতীয় খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে পঞ্চদশ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অসংখ্য রাজারা রাজত্ব করেন।
মহাস্থান গড়ের পশ্চিম পাশেই রয়েছে ঐতিহাসিক কালীদহ সাগর এবং পদ্মাদেবীর বাসভবন। এসব দেখে আপনি যেতে পারনে শীলাদেবীর ঘাটে। এই ঘাটের পশ্চিম পাশেই রয়েছে জিউৎকুন্ড নামে একটি বড় কুপ। কথিত আছে এই কুপের পানি পান করে পরশুরামের আহত সৈন্যরা সুস্থ হয়ে যেত।

এসব অলৌকিক আর পৌরাণিক নিদর্শন দেখেতে দেখতেই আপনি হাজির হয়ে যেতে পারেন মহাস্থান গড়ের মিউজিয়ামে। মহাস্থান গড় খননের ফলে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন যুগের বিভিন্ন দ্রব্যাদিসহ অনেক দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে যা গড়ের উত্তরে অবস্থিত জাদুঘরে সংরতি আছে। এছাড়া মহাস্থান জাদুঘরের সামনে অবস্থিত গোবিন্দ ভিটাও দেখে নিতে পারেন।
গোবিন্দ ভিটার ঠিক উত্তরপাশ ঘেঁষে বহমান এককালের প্রমত্তা করতোয়া। তবে দখলে সরু হয়ে এসেছে নদী। দূষণে কালচে বর্ণ ধারণ করেছে পানি। নদীর কথাটুকু বাদ দিলে চোখ ধরা দেবে সবুজ -শ্যামল বেষ্টিত এক মনোমুºকর পরিবেশ। যা সবাইকে বিমোহিত করে। অতন্ত্য আপন করে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের কাছে টানে। সেই করতোয়া ঘেঁষেই ইতিহান-ঐতিহ্যর সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে গোবিন্দ ভিটা। কালের আবর্তে ইটের গায়ে জমেছে ময়লা। নিপুন হাতে গড়া সেই ইটগুলোয় সার্বক্ষনিক যেন লাল-কালোর আভরণ ছড়াচ্ছে চারদিকে। পুরো চত্বরে গজিয়েছে সবুজ ঘাস। গোবিন্দ ভিটার উপর থেকে সমতল পর্যন্ত ছেয়ে আছে এ ঘাস। যেন সবুজের আলোকচ্ছটা ছড়িয়ে দিচ্ছে ঘাসগুলো। গোবিন্দ ভিটারসীমানা প্রাচীরবেষ্টিতে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের জন্য প্রবেশ করতে রাখা হয়েছে টিকেট ব্যবস্থা।
আর হ্যা, নানী, দাদী অথবা মা-বাবার কাছে শোনা বেহুলার বাসর ঘরটাও যদি দেখে যেতে পারেন তাহলে কেমন হয়? তার জন্য মহাস্থান বাসস্ট্যান্ড থেকে আপনাকে আরও ২ কি. মি.দণি পশ্চিমে যেতে হবে। স্থানীয়ভাবে এটি বেহুলার বাসর ঘর নামেই বেশি পরিচিত। অনেকে একে লক্ষ্মীন্দরের মেধ বলে থাকে। এটি বাংলাদেশ প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত অন্যতম প্রতœতাত্ত্বিক স্থান। ইস্টক নির্মিত এ স্থাপটি পূর্ব পশ্চিমে অপোকৃত দীর্ঘ। এখানে ত্রিকোন বিশিষ্ট ১৭২ টি ক আছে। এ কগুলোর দেখতে বেশ অস্বাভাবিক এবং এলোমেলো বুনিয়াদ এর বোধগম্যতাকে আরো দুর্বোধ করে তোলে।
Posted ৮:০৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭
America News Agency (ANA) | Payel