
অনলাইন ডেস্ক : | রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৭ | প্রিন্ট | 848 বার পঠিত
বরাম, চাপতি, টাংনি, বাদালইল্লা, কালিকুটা, ছায়ার হাওরসহ অসংখ্য হাওর আর নদী বেষ্টিত সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা। এই জনপদের বাতাসে কান পাতলে এখন কেবলই শোনা যাচ্ছে লাখো কৃষকের বোবা কান্নার সুর। এবার বাধ ভেঙে ফসল ডুবে হাওর এলাকার মানুষ সর্বশান্ত হয়ে গেছে। ৯০ ভাগ বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ায় সারা বছর কি করে জীবন কাটাবেন সেই চিন্তায় অস্থির। ভরা বৈশাখে হাওরে ধান নেই, মাছ নেই। খামারে নেই হাঁস।
এমনি এক দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকা পরিদর্শনে আজ রবিবার আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকালে তিনি হেলিকপ্টারযোগে সুনামগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকা পরিদর্শন করবেন। পরে সকাল ১০টায় শাল্লা উপজেলার শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফসলহারা কৃষকদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করবেন। এরপর জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। তার আগমন উপলক্ষে শাল্লায় ৫ স্তরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক টহল দেবে। পুলিশ সুপার বরকতুল্লাহ খান জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে স্থল ও জলপথে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জ জেলায়এ বছর চাষ হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৮২ হেক্টর ফসলি জমিতে। এর মধ্যে হাওরে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৮২ হেক্টর ও হাওরের বাইরে বিভিন্ন গ্রামে নিচু জমিতে চাষ হয়েছে আরো ৫৬ হাজার ৪০০ হেক্টর। গত ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেলার হাওরে ৯০ শতাংশ ফসলের ক্ষতি হয়েছে। হাওরের বাইরে ক্ষতির পরিমাণ ১৭ হাজার ৩৮৮ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত চাষির সংখ্যা ২ লাখ ৭৭ হাজার ১৮৮ জন। কৃষি বিভাগের এই ক্ষতির পরিমাণ ধরেই জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার কৃষকের সহায়তা প্রাপ্তির পরিসংখ্যান পাঠিয়েছে।
এদিকে পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জানিয়েছেন, ক্ষতি কমিয়ে আনতে আগামী বছর থেকে সুনামগঞ্জের রক্তি, আবুয়া, মরা সুরমা ও যাদুকাটা- এই চারটি নদী খনন করা হবে। তিনি শুক্রবার রাতে স্থানীয় সার্কিট হাউসে সাংবাদিক ও সুধীজনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে একথা জানান। তিনি বলেন, বাঁধ নির্মাণকাজে দুর্নীতির প্রভাব ভয়াবহ। এখানে দুর্নীতির কারণে গণহারে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঘটনার তদন্ত চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্ষতি কমিয়ে আনতে আগামী বছর থেকে চারটি নদী খনন, কিভাবে আগাম জাতের ধান চাষ করা যায় সেটা নিয়ে ভাবা হচ্ছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, কতটুকু বৃষ্টি হয়েছে, বাঁধের উচ্চতা কত ছিল- এসব নিয়ে কেউ আলোচনা করে না। সবাই শুধু পাউবোর দুর্নীতিকেই দেখে। বাঁধ ভেঙে নয়, বাঁধ উপচে হাওরের ফসল তলিয়ে গেছে। সবাই ঢালাওভাবে বলছে ৪৮ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। এটা ঠিক না। আমরা পিআইসিকে ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা এবং ঠিকাদারদের ৯ কোটি টাকা বিল দিয়েছি। বাকিগুলো আটকে দিয়েছি।
সূত্র: ইতেফাক
Posted ১২:০৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৭
America News Agency (ANA) | Payel