অনলাইন ডেস্ক : | বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট | 883 বার পঠিত
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অংশগ্রহণে ১৭তম এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর পর্দা উঠছে আগামী পহেলা ডিসেম্বর। ওইদিন বেলা ১১টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে এই উত্সবের উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুুহিত।
এশীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে এবার স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়া ৫৩টি দেশের চিত্রশিল্পী, শিল্প সমালোচক ও মিউজিয়াম কিউরেটরবৃন্দ অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে কয়েকজন রয়েছে খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী ও সমালোচক। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা জুড়ে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। চিত্র সংক্রান্ত আলোচনা সভা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা ও জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে। মূল প্রদর্শনীর বাইরে দেশবরেণ্য ৫৫ জন ও ১৭ জন আমন্ত্রিত বিদেশি শিল্পীর বিশেষ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনালয়ে। যেখানে থাকবে জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, সফিউদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ কিবরিয়া, আবদুর রাজ্জাক, কাইয়ুম চৌধুরীসহ বরেণ্য শিল্পীদের সেরা শিল্পকর্ম।
প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ ছাড়া অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে অংশ নিচ্ছে : ভারত, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, ভুটান, ব্রুনাই, চীন, পূর্ব তিমুর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, জাপান, মালয়েশিয়া, কুয়েত, লেবানন, ফিলিস্তিন, ফিলিপাইন, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, সিরিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত অন্যতম। এসব দেশের ১৫০ জন শিল্পীর ২৬০টি শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হবে। প্রদর্শনীর জন্য অনলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৫৬০ জন শিল্পী তাদের শিল্পকর্ম জমা দেন। এসব শিল্পকর্ম থেকে যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশের ১৪৮ জন শিল্পীর ১৫৪টি শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হবে। বাংলাদেশের শিল্পীদের শিল্পকর্ম নির্বাচনের জন্য সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি শিল্পকর্ম নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর বিশিষ্ট শিল্পীদের অংশগ্রহণে এ অনন্য প্রদর্শনী ১৯৮১ সালে যাত্রা শুরু করে। এবারও এই প্রদর্শনী কেন্দ্র করে ঢাকায় আসছেন ১৪৫ বিদেশি অতিথি।
উত্সবের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কোরিয়ান এক্সপার্ট প্রোসেসিং জোনে তিন দিনের আন্তর্জাতিক আর্ট ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। এতে পাঁচজন বিদেশি শিল্পী অংশ নেবেন। তারা হলেন— চীনের ইউনান আর্টস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও মাস্টার ইন্সট্রাক্টর ট্যাং জোহি গ্যাং, ভারতের শিল্পী অধ্যাপক ধীরাজ চৌধুরী, জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটি অব আর্টস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট তয়োমি হোশিনা, কোরিয়ার অধ্যাপক সং ডেসাপ এবং শ্রীলঙ্কার জগত ওয়েরিসিংহে। আর্ট ক্যাম্পে বাংলাদেশের শিল্পীদের মধ্যে অংশ নেবেন— ড. ফরিদা জামান, হাশেম খান, মাহমুদুল হক, মনিরুল ইসলাম, নাইমা হক, নাজলি লাইলা মনসুর, রফিকুন নবী, রোকেয়া সুলতানা ও সমরজিত্ রায় চৌধুরী। তারা প্রত্যেকেই দুইটি করে ছবি আঁকবেন। আগামী ৫ থেকে ৭ ডিসেম্বর এই আর্ট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে। এবারকার উত্সবে ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। পুরোটাই দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
এ প্রদর্শনীর আয়োজন উপলক্ষে গত রবিবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শনীর এ সব তথ্য তুলে ধরেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এ সময় সংস্কৃতি সচিব আকতারী মমতাজ, শিল্পকলা একাডেমেরি মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী উপস্থিত ছিলেন। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন ‘নিরাপত্তায় যেন কোনো কমতি না থাকে সে জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’
মাসব্যাপী এ প্রদর্শনীতে দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক শিল্পকর্ম যেমন- চিত্রকলা, ভাস্কর্য, ছাপচিত্র, আলোকচিত্র, স্থাপনাশিল্প ও নতুন মাধ্যমের শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হবে। পারফর্মেন্স আর্ট বাংলাদেশের আটজন শিল্পী। ২ ও ৩ ডিসেম্বর জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘আর্ট অ্যান্ড সিটি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দিন সেমিনারে মূল বক্তব্য রাখবেন কথাশিল্পী অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। আলোচনায় অংশ নেবেন স্থপতি সামসুল ওয়ারেস ও চিত্রশিল্পী মোস্তফা জামান মিঠু। দ্বিতীয় দিনের সেমিনারে অংশ নেবেন বিদেশি শিল্পীরা। প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
Posted ১০:৫২ অপরাহ্ণ | বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৬
America News Agency (ANA) | Payel