বাংলাদেশ সরকারের সহকারী এটর্নী জেনারেল, বাংলাদেশ এ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের কার্যকরি পরিষদের নির্বাচিত সদস্য এডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টুর সাথে প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশের জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় ও সাফ এবং অলিম্পিক গেইমসে যে সব তারকা খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভাটি গত ৩০ এপ্রিল দুপুরে জ্যাকসন হাইটসের খাবারবাড়ি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়। সাবেক জাতীয় ও রেকর্ড হোল্ডার এবং ঠিকানার প্রেসিডেন্ট / সিওও সাঈদ- উর- রবের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিলের সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আব্দুর রকিব মন্টু। সম্মানিত অতিথি ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু এমপি। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান, সাবেক অলিম্পিয়ান শাহজালাল মোবিন, সাফ গোল্ড মেডেলিস্ট বিমল চন্দ্র তরফদার, জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় রিপন ফারুক, আব্দুর রহিম বাদশা, মাহবুবুর রহমান মিঠু, বক্সার সৈয়দ এনায়েত আলী, মফিজুল ইসলাম রুমি, জে মোল্লা সানি, মোহাম্মদ বাবুল, বাংলাদেশ স্পোটর্স কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাসিত খান বুলবুল, লাবনী চৌধুরী, কামুজ্জামান বাচ্চু, শেখ আতিকুল ইসলাম, মোকাররম হোসেন, এস এম ফেরদৌস, আব্দুস শহীদ দুদু, শমসের আলী, ড. শাহানা আলী, বিউটি, জুয়েল আহমেদ, ব´ার মোহাম্মদ সেলিম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আবাহনী ক্লাবের সাবেক ম্যানেজার ও বাংলাদেশ স্পোটর্স কাউন্সিলের কোষাধ্যক্ষ ওয়াহিদ কাজী এলিন, নিপা, গোলাম মোস্তফা, সফিকুর রহমান জন, হাসান জিলানী, ক্রীড়া সাংবাদিক মনিজা রহমান, সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ, আব্দুর রব পাশা, জাহানারা বেগম, মনোয়ারা বেগম, ফেরদৌসী বেগম বিউটি প্রমুখ। আব্দুল মতিন খসরু বলেন, খেলাধুলা হচ্ছে সুস্থ মানুষ হবার অন্যতম উপাদান। দেহ- মন ভাল রাখতে হলে খেলাধুলা করতে হবে। সর্বোপরি সুস্থ জাতি গঠন করতে হলেও খেলাধুলা করতে হবে। এই উপলব্ধি আমাদের আসতে হবে। আমাদের সময় আমরা খেলতে চাইলে আমার বাবা- মারা লাঠি নিয়ে দৌড়াতেন। এখন সেই অবস্থা নেই। আমি অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলাম, সেখানে সাকিব আল হাসানের কারণে পরিচিত হয়েছি। বাংলাদেশের ক্রিকেট সারা বিশ্বে আমাদের পরিচিত করেছে। ক্রিকেট আমাদের জাতির জন্য যা এনে দিয়েছে, অন্য কোন ক্ষেত্রে আমরা তা অর্জন করতে পারিনি। অন্য কোন খেলাধুলা আমাদের আন্তর্জাতিক গৌবর এনে দিতে পারেনি। সাঈদ- উর- রব আব্দুর রকিব মন্টুকে অভিনন্দন এবং আব্দুল মতিন খসরুকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি বাংলাদেশে মাঝে মাঝে বেড়াতে গেলে এ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনে যাই। ফেডারশনে গিয়ে মনে হয়নি এটা কোন ফেডারেশন, কয়েকটি চেয়ার টেবিল আছে, কোন খেলোয়াড় নেই। সন্ধ্যার পর দেখা যায় চেয়ারে এসে বসেন সাবেক কোন জেনারেল এবং সরকারি আমলা। তিনি বলেন, খেলাধুলার উন্নয়নে রাইট জায়গায়, রাইট লোক বসাতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এখন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় না, শুধু অর্থ ভাগভাটোয়ারা করা হয়। তেলে মাথায় তেল দেয়া হয় কিন্তু খেলোয়াড়দের কোন উন্নয়ন হয় না। তিনি বলেন, আমরা যখন খেলাধুলা করতাম আমাদের টার্গেট ছিলো অলিম্পিকে যাবো। আর এখন আমাদের খেলোয়াড়দের টার্গেট থাকে পশ্চিমবঙ্গ। তিনি আরো বলেন, একজন খেলোয়াড়ের কাছে স্বর্ণ চাইলে হবে না, তাকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, অর্থ এবং সুযোগ- সুবিধা দিতে হবে। সারা দেশ থেকে ট্যালেন্ট হান্ট করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা যারা প্রবাসে থাকি তারা বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতা করে থাকি। বিএনপির শাসনামলে আমরা প্রবাস থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়েছিলাম জাতীয় প্রতিযোগিতা সম্পন্ন করার জন্য। মরহুম ইমরানকে সাহায্য প্রদান করি। তিনি আরো বলেন, খেলাধুলাকে রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ফিজিক্যাল কোর্স চালু করার দাবি জানান। তিনি বলেন, এসব সরকারের একার পক্ষে করা সম্ভব নয়, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি সাংবাদিকদের সমালোচনা করে বলেন, ঢাকায় কিছু কিছু সাংবাদিক খাম নিয়ে এ্যাথলেটিক্সের দুই ইঞ্চি নিউজ করেন এবং ক্রিকেট নিউজ বড় করে ছাপেন। তারা বিখ্যাত খেলোয়াড়দের নিয়ে কোন অনুষ্ঠান করেন না। তিনি আরো বলেন, হেলথ সাইন্স ছাড়া ভাল রাজনীতিবিদ, ভাল খেলোয়াড় হতে পারবে না কেউ। আব্দুর রকিব মন্টু বলেন, আমি আপনাদের লোক। আপনারা আমাকে সব সময় উপদেশ দিবেন, আপনাদের কাজগুলো আমার মাধ্যমে আদায় করে নেবেন। তিনি দায়িত্বপ্রাপ্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী, ক্রীড়া মন্ত্রী, ক্রীড়া উপমন্ত্রী এবং তার পরিবারকে ধন্যবাদ জানান। তবে আমি রাজনীতির কারণে এই পদ পাইনি। তিনি আরো বলেন, আমি সবচেয়ে খারাপ সময়ে দায়িত্ব পেয়েছি। ভাল কাজ করার জন্য আমি চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যেই আমরা সারা বছরের ক্যালেন্ডার ঘোষণা করেছি। তিনি বলেন, এ্যাথলেটিক্সই হচ্ছে মাদার অব অল গেইমস। তবে দু:খজনক বিষয় হচ্ছে, আমরা নিজেরাই নিজেদের সম্মান করতে পারি না, আমাদের সম্মানীত খেলোয়াড়দের সম্মান জানাতে কার্পণ্য করি। এই ধারা পরিবর্তন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমি কাজ করার জন্য এসেছি, কাজ করতে না পারলে পদত্যাগ করে চলে যাবো। আমাদের দেশে দেখা যায়, পিস্তল ঠেকিয়ে ফেডারেশন দখল করতে, এ সব বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, বিদেশে খেলোয়াড় পাঠানোর ব্যাপারে আমরা একটি কমিটি করে দিয়েছি। সেই কমিটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, যোগ্য খেলোয়াড়ই যাবে। আমরা খেলোয়াড়দের বৃত্তি এবং চিকিৎসা সেবা চালু করতে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আমি অপসংস্কৃতির রাজনীতির পার্ট হতে চাই না, উন্নয়নের রাজনীতির অংশিদার হতে চাই। আব্দুর রহিম বাদশা আয়োজক এবং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথিকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। অন্যান্য বক্তারা বিভিন্ন ফেডারেশনে অনিয়ম তুলে ধরেন। সেই অনিয়ম দূর করার আশ্বাস প্রদান করেন জনাব মন্টু।
Posted ১২:৫৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৫ মে ২০১৭
America News Agency (ANA) | Payel