লটারি বলে কথা! কে পাবেন আর কে পাবেন না- এটা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারে না। আর ভাগ্যে কার কী আছে, সেটা লটারিতেই নির্ধারিত হয়েছে। সেকশন-৮ হাউজিং ভাউচারের বিষয়ে অনেকেই হতাশ হয়েছেন আবার অনেকেই খুশি হয়েছেন। যারা পেয়েছেন তারা খুবই খুশি, যারা পাননি তারা ভীষণ হতাশ। কারণ এই লটারি অনেকেরই খুবই প্রয়োজন ছিল। এই প্রকল্পে ভাড়া সহায়তা পেলে অন্তত কিছুটা স্বস্তি নিয়ে তারা ভালোভাবে বাস করতে পারতেন। যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর যারা অসহায়ভাবে আছেন, তারা সেখান থেকে মুক্তি পেতেন। বেসমেন্টে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যারা বসবাস করছেন, তাদের ভোগান্তি লাঘব হতো।
যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন, তাদের অনেকে লটারি পেলেও অনেকেই পাননি। সেকশন-৮-এ আবেদন করে যারা লটারি জিতেছেন তাদের যেমন স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে, উল্টোদিকে যারা পাননি তাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে। এমনও দেখা গেছে, নিউইয়র্কে এক দশক কিংবা এক যুগ ধরে আছেন এমন ব্যক্তির পরিবার আবেদন করে লটারিতে জয়ী হতে পারেননি, কিন্তু এখানে আসার এক-দুই বছরের মধ্যেই অনেকে সেকশন-৮ লটারি বিজয়ী হয়েছেন । ফলে এক পক্ষ হতাশ, আরেক পক্ষ খুশি।
সূত্র জানায়, সেকশন-৮ লটারি যারা বিজয়ী হয়েছেন, তারা এখন অপেক্ষা করছেন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পরবর্তী ইমেইল ও মেইল পাওয়ার জন্য। এই মেইল পেলে পরবর্তী ধাপের কাজ শুরু হনে। ইতিমধ্যেই তারা প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করতে শুরু করেছেন। কিন্তু কী কী ডকুমেন্ট লাগবে এবং কবে কখন কাকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হবে, এটা এখনো না জানার কারণে এখনই সব নথিপত্র জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। সেকশন-৮ এর জন্য সব নথিপত্র কারেন্ট দেখাতে হবে। যাকে যেদিন ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হবে, তার সেই সপ্তাহের বা সেই সময়ের শেষ পে চেকগুলো লাগবে। ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে ইন্টারভিউয়ের আগের দিনের।
নাইচার হাউজিং অথরিটিতে কর্মরত আছেন এমন একটি সূত্র জানায়, যারা লটারি বিজয়ী হয়েছেন, তাদেরকে মেইল ও ইমেইল দুটি পাঠানো হয়েছে। যারা পাননি তাদেরকেও ইমেইল ও মেইল করা হয়েছে। যারা যোগ্য হয়েছেন, তাদেরকে পর্যায়ক্রমে প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র ও ডকুমেন্টের জন্য ডাকা হবে। কেউ চাইলে ডকুমেন্ট অনলাইনেও জমা দিতে পারবেন। আবার কেউ চাইলে ইন্টারভিউয়ের জন্য যে অফিসে হাজির হওয়ার বার্তা পাবেন, সেখানে সব নথিপত্র জমা দেবেন। নথিপত্র ও ইন্টারভিউ যোগ্য হলে এবং সব প্রক্রিয়ায় পাস করলে তার বাসা পাওয়ার বিষয়ে প্রক্রিয়া শুরু হবে।
লটারি বিজয়ী হয়েছেন এমন একজন বলেন, আমি লটারিতে প্রাথমিকভাবে সেকশন-৮ এর জন্য নির্বাচিত হয়েছি। প্রথম পর্যায়ে আছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। কী করতে হবে এখনো সে-সংক্রান্ত ইমেইল পাইনি। দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ইমেইল পেলে সে অনুযায়ী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করব। এখন অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তিনি বলেন, এখন যেখানে আছি সেখানে বাসা ভাড়া বেশি। তার ওপর আবার বাড়িওয়ালা ভাড়া বাড়িয়েছেন। পাশাপাশি সমস্যা হলো বাসার বিল, ট্যাক্সসহ যা কিছু আছে, সবকিছুু ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে আদায় করেন। এক ফ্যামিলির বাসা তিন ফ্যামিলির কাছে ভাড়া দিয়েছেন। তিনি হাজার হাজার ডলার আয় করছেন, আবার অন্যায়ভাবে ভাড়াও বাড়াচ্ছেন। কিছু বলতে গেলে কথা শুনতে চান না। এই লটারির মাধ্যমে এ ধরনের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে চাই।
আরেকজন লটারি বিজয়ী বলেন, আবেদন করে পেয়ে যাওয়ায় ভীষণ ভালো লাগছে। বাকি আনুষ্ঠানিকতার জন্য অপেক্ষা করছি।
দুই বছরও হয়নি নিউইয়র্কে এসেছেন, এমন এক লটারি বিজয়ী বলেন, এত কম সময়ে বাসার জন্য নির্বাচিত হওয়ায় তিনি খুব খুশি। তার মতে, আসলে লটারি ভাগ্য বলে কথা। কে কখন এখানে এসেছে, এটা বড় বিষয় না। কার ভাগ্যে লটারি আছে, সেটাই বড় বিষয়।
লটারিতে জয়ী হতে পারেননি এমন এক প্রবাসী বলেন, অন্তত একটি বাসা পেলে কষ্ট করে এখন যে বাসায় আছি সেখানে থাকতে হতো না। বাসা ভাড়ার জন্য কিছুটা সহায়তা পেলে একটু ভালোভাবে থাকতে পারতাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য, লটারিতে নাম ওঠেনি। কিছু করার নেই। প্যান্ডামিকের সময়ও একবার সেকশন-৮ এর আবেদন করেছিলাম, তখনো পাইনি। আসলে ভাগ্যটাই খারাপ।
Posted ১১:১০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪
America News Agency (ANA) | ANA