
এনা অনলাইন : | বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট | 12734 বার পঠিত
আমেরিকায় একটি বাড়ি কেনার স্বপ্ন সব প্রবাসী বাংলাদেশি আমেরিকানের। কিন্তু এই স্বপ্ন চাইলেই পূরণ হওয়ার নয়। বাড়ি কেনার প্রক্রিয়াটি অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রস্তুতির ব্যাপার এবং পরিকল্পনারও ব্যাপার। বাড়ি কেনার জন্য ভালো ক্রেডিট স্কোর যেমন লাগে, তেমনি লাগে ভালো ইনকাম। থাকতে হয় বাড়ির লোন পরিশোধ করার মতো সামর্থ্য। সেই সঙ্গে লোন পাওয়ার মতো যোগ্যতাও থাকতে হয়। বাজেটের মধ্যে বাড়ি কিনতে হয়। এসব কিছু মিলিয়ে বাড়ি কেনার জন্য অনেক পরিকল্পনা করতে হয়। রেডি রাখতে হয় সব নথিপত্র। এসব নথিপত্র থাকার পর বাড়ি কিনতে গেলে যাদের ডব্লিউটুতে হাই ইনকাম রয়েছে, তারা লোন পাচ্ছেন। কিন্তু অনেকেই ডব্লিউটুতে ইনকাম থাকার পরও ইন্টারেস্ট বাড়ায় এবং ইনফ্লাশনের কারণে এখনো লোন পাচ্ছেন না। কারণ তাদের আয় কম।
একজন বিশেষজ্ঞ রিয়েলটর বলেন, অনেকেই বাড়ি কেনার সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পনা করেন বাড়ি ভাড়া দিয়ে অর্থ আয় করবেন। আর সেই অর্থ দিয়ে বাড়ির মর্টগেজ পরিশোধ করবেন। আর নিজে থাকবেন ফ্রি। এখন এ ধরনের পরিকল্পনা করা উচিত হবে না। কারণ বাড়ির মালিক হতে গেলে অবশ্যই এটা মনে রাখতে হবে, তাকে কিছু পেমেন্ট করতে হবে। যদিও আগে যারা বাড়ি কিনেছেন, তাদের অনেকেই ভাড়ার অর্থ দিয়ে মর্টগেজ দিতে পারছেন। আগে ইন্টারেস্ট রেট কম থাকায় মর্টগেজের পরিমাণ কম ছিল। ফলে তারা তা দিতে পারছেন। এ ছাড়া আগে বাড়ির দাম কম ছিল, তখন ইন্টারেস্ট রেট বেশি হলেও সমস্যা হয়নি। কারণ যে বাড়ি ১৯৯৫ সালে আড়াই লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছে, তখন অনেক বেশি ইন্টারেস্ট দিয়ে বাড়ি কেনা হলেও এখন ওই বাড়ির দাম হয়েছে দেড় মিলিয়ন ডলার। দিনে দিনে আয় বাড়ার কারণে অনেকেই বাড়ির পুরো অর্থ পরিশোধ করে দিয়েছেন। কেউ কেউ আছেন এখনো লোন চালিয়ে নিচ্ছেন। কারণ মর্টগেজের চেয়ে ভাড়া থেকে বেশি আয় করছেন। তারা অনেকেই দেখা যায় ফ্রিতে থাকার সুযোগ পান।
তবে এখন অবস্থা অনেক বদলেছে। বর্তমানে বাড়ির দাম অনেক বেশি। এ কারণে অনেকেই বাড়ি কিনতে পারছেন না। এর মধ্যে আবার বেড়েছে লোনের ইন্টারেস্ট রেট। ইন্টারেস্ট রেট এখন সাড়ে ছয়ের উপরে। অনেকে ধারাবাহিকভাবে বেশি ইনকাম না থাকায় বাড়ি কিনতে পারছেন না। তবে যাদের এক লাখ থেকে দেড় লাখ ডলার পর্যন্ত বছরে ইনকাম আছে, তারা সহজে লোন নিয়ে বাড়ি কিনছেন। তবে লোনের ইন্টারেস্ট বেশি হওয়ার কারণে মর্টগেজ অনেক বেশি। সেই সঙ্গে আছে বিল। তবে কোনো কারণে আগামী দিনে যদি তার ইনকামের ধারাবাহিকতা না থাকে, তখন বাড়িটি ঝুঁকির মুখে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে রিয়েলটর মোর্শেদা জামান বলেন, অনেকে বাড়ি কিনেছেন ৫ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে। এরপর তার বাড়ির মর্টগেজ আসছে ৪৮০০ ডলার। বিল আসবে আরো এক হাজার ডলার। সব মিলে প্রায় ছয় হাজার ডলার। এই ছয় হাজার ডলার প্রতি মাসে তাকে পে করতে হবে। হিসাব করে দেখা গেছে, তিনি চার হাজার ডলারের মতো ভাড়া থেকে ইনকাম করতে পারবেন। বাকি থাকবে আরো দুই হাজার ডলার। ৩০ বছর তাকে এই দুই হাজার ডলার নিয়মিত পেমেন্ট দিয়ে যেতে হবে। প্রথম প্রথম হয়তো সেটি দিতে পারবেন, এরপর সেটি দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে অথবা ক্লান্ত হয়ে যাবেন। কারণ ইনকাম না থাকলে প্রতি মাসে পকেট থেকে দুই হাজার ডলার খরচ বহন করা সহজ কথা নয়। এ ছাড়া ভাড়া সব সময় একই রকম থাকবে বা পাওয়া যাবে, সেটিও নয়। ভাড়া না থাকলে তখন ওই বাড়তি অংশও নিজের পকেট থেকে দিতে হবে। আর দিতে না পারলে তখন বাড়ি ফোরক্লোজারের মুখে পড়বে। এ কারণে এখনই সতর্ক থাকতে হবে। বাড়ি কিনে ফোরক্লোজারে পড়ার চেয়ে না কেনাই ভালো। সেই সঙ্গে অপেক্ষা করা উচিত কখন লোনের ইন্টারেস্ট রেট কমে।
আরেকজন রিয়েলটর বলেন, যাদের অনেক ভালো ইনকাম আছে, যত সমস্যাই হোক না কেন তারা নিজেরা লোনের কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন। যাদের ২০-২৫ শতাংশ কিংবা এর বেশি ডাউন পেমেন্ট দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে, তারা বাড়ি যেকোনো সময় কিনতে পারেন। পরে লোনের ইন্টারেস্ট রেট কমলে রিফাইন্যান্স করতে পারেন। রিফাইন্যান্স করার সময় তার ভালো ইনকাম থাকতে হবে। আয়ের ডকুমেন্টও লাগবে।
Posted ৯:০২ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
America News Agency (ANA) | ANA