
এনা অনলাইন : | শুক্রবার, ০৪ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 12764 বার পঠিত
ইনফ্লাশন, মর্টগেজের সুদের হার বেশি হওয়ায় সম্প্রতি বাড়ির দাম কিছুটা কমতে থাকলেও মর্টগেজ বাড়ায় মানুষ এখনো কাক্সিক্ষত বাড়ি কিনতে পারছে না। এত দিন নিউইয়র্কে প্রতিনিয়ত বাড়ির দাম ও মর্টগেজের ইন্টারেস্ট বাড়ায় স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য জীবনধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির লাগাম টানতে না পারায় মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। মানুষের বিগত দুই-আড়াই বছরে সব জিনিসের দাম হাতের নাগালের বাইরে গেলেও সেভাবে আয় বাড়েনি। খরচ বাড়ায় মানুষ কুলিয়ে উঠতে পারছে না। এ অবস্থায় অনেকেই সিটি ছেড়ে বিভিন্ন স্টেটে মুভ করেছেন। আবার কেউ কেউ সিটি ছেড়ে নিউইয়র্ক স্টেটের বাইরে ও অন্যান্য সিটিতে মুভ করেছেন। অনেকেই স্বল্প ভাড়ায় বাসা নিয়েছেন কিংবা বাড়ি কিনেছেন। এদিকে যারা এখনো নিউইয়র্ক সিটিতে আছেন, তারাও আছেন নানা সমস্যায়। কারণ তারা আর চলতে পারছেন না। নানা সহযোগিতার কথা বলা হলেও সেগুলো কেবল কম আয়ের মানুষের পক্ষেই পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।
এ ধরনের মানুষের জন্য অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং হতে পারে একটি উপযুক্ত বাসস্থান। তবে এই অ্যাফোর্ডেবল হাউজিংয়ের আবেদন করে সবাই যে বাসা পাবেন, বিষয়টি এ রকম নয়। কারণ এতে আবেদন করার পর লটারি হয়। লটারিতে যাদের নাম বিজয়ী হিসেবে উঠবে, তাদেরকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হবে। ইন্টারভিউতে যিনি সব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে পারবেন এবং সব নথিপত্র দিয়ে রিকয়ারমেন্ট পূরণ করতে পারবেন, তিনি বাসা লিজ নিতে পারবেন। লটারিতে জয়ী হয়েও বাসা পাননি, এমন নজিরও রয়েছে।
উল্লেখ্য, আবেদন করার সময় আবেদনকারী বাসায় যে কজন সদস্য নিয়ে থাকবেন বলে উল্লেখ করবেন, সে কজনই থাকতে পারবেন। তবে কারও বিয়ে হয়ে থাকলে কিংবা সন্তান হলে বিষয়টি জানাতে হবে। আবেদন করার পর পরিবারের কেউ মারা গেলে সেটিও জানাতে হবে। এরপর কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে।
এদিকে এ ধরনের আবেদনে যারা লটারিতে জয়ী হন, তাদের পরবর্তীতে ওই লিজ নবায়ন করতে হয়। যারা যে বাসায় থাকবেন, তাদের আয়ের সঙ্গে সমন্বয় করেই ভাড়া নির্ধারিত হয়। প্রতিবার লিজের মেয়াদ শেষ হয়ে আসার আগে এটি নবায়ন করতে হয়। সেই সঙ্গে সব তথ্য দিতে হয়।
সূত্র জানায়, নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স, ম্যানহাটন, ব্রঙ্কস ও ব্রুকলিনে বিভিন্ন হাউজিং প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নও করা হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আবেদন আহ্বান করছে। এই আবেদন যাচাই-বাছাই করেই প্রার্থীদের বাসা দেওয়া হচ্ছে।
সব শ্রেণির ও সব ধরনের আয়ের মানুষেরা এসব বাসা পেয়ে থাকেন। তবে এটি বিশেষভাবে উল্লেখ্য, সর্বনিম্ন আয় ও সর্বোচ্চ আয় কার কত হবে, তা উল্লেখ করা থাকে। সেই হিসাবে কেউ চাইলেও ওই সীমার নিচে কিংবা উপরে হলে আবেদন করতে পারবেন না। কেউ করলে তা বাতিল হয়ে যাবে। পরে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দেবে, তার আবেদন ইনকামের মধ্যে পড়ছে না। প্রতিবার আবেদন করার সময় তথ্য পরিবর্তন হয়ে থাকলে তা আপডেট করতে হবে।
সিটি জব করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও বাংলাদেশি কমিউনিটির অতি পরিচিত মুখ, কমিউনিটি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বোর্ড মেম্বার মোহাম্মদ এন মজুমদার বলেন, অ্যাফোর্ডেবল অব হাউজিং কেবল যে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য, বিষয়টি এমন নয়। যে কেউ তার আয়ের গাইডলাইন অনুযায়ী আবেদন করার যোগ্য হবেন। এখানে স্বল্প আয়ের মানুষ যেমন আছে, তেমনি এখানে অনেক মিড ইনকাম ও হাই ইনকামের মানুষও আছে। আয় অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারিত হবে। তাই বলব, যারা যোগ্য, তারা আবেদন করতে পারবেন। অ্যাফোর্ডেবল হাউজিংয়ের আবেদন করলে কিংবা লটারিতে জয়ী হলেই যে পাওয়া যাবে, বিষয়টি এমন নয়। এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। অনেক নথিপত্রের প্রয়োজন হয়।
তিনি আরো বলেন, যাদের প্রয়োজন তারা সেকশন এইটে আবেদন করতে পারেন। তবে সেকশন এইটে হাউজিং ভাউচারের জন্য আবেদন করার উপযুক্ত হতে হবে। আমরা সেকশন-৮ এর হাউজিং ভাউচার আবেদন করতে ও পেতে সহায়তা করি। কমিউনিটির সেবামূলক কাজের অংশ হিসেবে করে থাকি। যারা পারিবারিক সহিংসতার শিকার, ইনকাম কম এবং বয়স বেশি, তাদের জন্য এটি পেতে সুবিধা হয়। এ ছাড়া ডিজঅ্যাবল হলেও আবেদন করা যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইনফ্লাশনের কারণে ইন্টারেস্ট বাড়ছে। এই ইন্টারেস্ট ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এটি আরো বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। ইন্টারেস্ট বাড়ার কারণে বাড়ির দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে ইন্টারেস্ট না কমলে বাড়ির দাম কমলেও লাভ হবে না। কারণ বাড়ির দাম কম হলেও ইন্টারেস্ট বেশি হওয়ায় মর্টগেজ বেশি আসবে। তাই বাড়ি কেনার বিষয়টি লাভজনক না-ও হতে পারে। এ ছাড়া এখন লোন পেতেও সমস্যা হচ্ছে। কারণ ইন্টারেস্ট বেশি হওয়ায় আগে কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ লোন পাওয়ার যোগ্য হতেন, এখন তার চেয়ে কম পরিমাণে লোন পাওয়ার যোগ্য হচ্ছেন। একাধিক মর্টগেজ বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিচ্ছেন, যারা বাড়ি কেনার অপেক্ষা করছেন, তাদের আরেকটু অপেক্ষা করতে। ইন্টারেস্ট রেট কমে গেলে বাড়ি কেনার পরিকল্পনা করতে পারেন।
Posted ৪:০০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৪ নভেম্বর ২০২২
America News Agency (ANA) | ANA