শ্রীলঙ্কার দেয়া ১৪৩ রানের টার্গেট তাড়া করে ৪ উইকেটে জয় তুলে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাটিংয়ে নেমে ১ উইকেটে ৬১ রান করা শ্রীলংকা এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। দলের এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে একাই লড়াই চালিয়ে যান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বের নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে ২৪ ও ৭ রানে আউট হওয়া এ ওপেনার শনিবার দলের প্রয়োজনে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেন।
ইনিংসের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে খেলেন ১৯তম ওভার পর্যন্ত। ১৮.৪ ওভারে ডুয়াইন পিটুরিয়াসের বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচে পরিনত হন নিশাঙ্কা। দলীয় ১৩১/৭ রানে সাজঘরে ফেরার আগে ৫৮ বলে ৬টি চার ও তিন ছক্কায় দলীয় সর্বোচ্চ ৭২ রান করেন।
এছাড়া ২১ রান করেন তিন নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা চারিথ আসালঙ্কা। ১২ বলে ১১ রান করে ফেরেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা।
শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই নেমেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৪২ রানে অলআউট হয় লঙ্কানরা। শ্বাসরুদ্ধকর এই ম্যাচে মিলার ঝড়ে ১ বল আগে ৬ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে প্রোটিয়ারা।
সব উত্তেজনা জমে ছিল যেন শেষ ৩ ওভারে। জয়ের পাল্লা ভারি থাকা প্রোটিয়াদের স্বপ্নে বড় ধাক্কা খায় ভানিন্দু হাসারাঙ্গা পরপর ২ বলে তেম্বা বাভুমা ও ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসকে আউট করলে। দারুণভাবে খেলায় ফেরা শ্রীলঙ্কা চেপে ধরে প্রোটিয়াদের। হাসারাঙ্গার ওই ওভারে আসে ৬ রান। পরের ওভার করতে আসা দুষ্মন্থ চামিরাও চেপে ধরেছিলেন। তবে চতুর্থ বলে কাগিসো রাবাদা ছক্কা মারলে আশা জেগে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকার।
ফলে শেষ ওভারে জিততে প্রয়োজন পড়ে ১৫ রান। লাহিরু কুমারার প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে রাবাদা স্ট্রাইক দেন মিলারকে। হিসাবটা তখন এমন- ৫ বলে ১৪। স্ট্রাইকে গিয়েই ঝড় তুললেন মিলার। পরপর ২ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়ে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেন দলকে। আর রবাদার বাউন্ডারিতে ১ বল আগেই নাটকীয় জয় লেখা হয়ে যায় প্রোটিয়াদের।
মিলার ১৩ বলে ২ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ২৩ রানে। রাবাদা ৭ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ১৩ রানে। তবে ম্যাচটি টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন আসলে অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা। ৪৬ বলে ১ চার ও সমান ছক্কায় তিনি করেন ৪৬ রান। ১৯ রান আসে এইডেন মারক্রামের ব্যাট থেকে। কুইন্টন ডি কক করেন ১২ রান।
শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে সফল বোলার হাসারাঙ্গা। এই স্পিনার ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। ২ উইকেট পেয়েছেন চামিরা।
এদিকে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাট্রিক করলেন শ্রীলঙ্কা হাসারাঙ্গা। ১৫তম ওভারের শেষ বলে এইডেন মার্করামকে তুলে নেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তখন কে জানত, হ্যাটট্রিকের দেখা পাবেন! ১৮তম ওভারে এসে প্রথম দুই বলে তেম্বা বাভুমা ও ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসকে তুলে নিয়ে এবার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক উপহার দিলেন শ্রীলঙ্কার এ স্পিনার।
প্রথম রাউন্ডে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক তুলে নেন আয়ারল্যান্ডের পেসার কুর্টিস ক্যাম্ফার। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিক অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার ব্রেট লি–র। ২০০৭ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি।
১৪২ রান তাড়া করতে নেমে ব্যাট করছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯ রান করা মার্করামকে তুলে নেওয়ার পর শেষ ৫ ওভারে ৪৭ রান দরকার ছিল প্রোটিয়াদের। হাতে ৬ উইকেট। এ অবস্থায় ১৮তম ওভারের প্রথম দুই বলে ২ উইকেট নিয়ে প্রোটিয়াদের পাল্টা চাপে ফেলেছেন হাসারঙ্গা।
অনেকদিন ধরেই তিনি ছিলেন আলোচনায় । হাসারাঙ্গা আতঙ্ক হতে পারেন বলা হচ্ছিল আগে থেকেই। কতটা? সেটাই যেন হাড়ে হাড়ে টের পেল দক্ষিণ আফ্রিকা। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছেন শ্রীলঙ্কান তারকা হাসারাঙ্গা।
তাবরিজ শামসির স্পিন আর পিটোরিয়াসের গতির মুখে পড়ে দুই অঙ্কের ফিগার রান করতে পারেননি কুশাল পেরেরা, ভানুকা রাজাপক্ষে, আভিস্কা ফার্নান্দো, ওয়ানেন্দু হাসারঙ্গা, চামিকা করুনারত্নে, দুশমন্ত চামিরা ও মহেশ থাকসেনা।
Posted ৯:১৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২১
America News Agency (ANA) | ANA