এবার দুর্গাপূজাকে ঘিরে সহিংসতার কোনো গোয়েন্দা তথ্য না থাকলেও যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মতো পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রেখেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে এসে বৃহিস্পতিবার এ কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পূজাকে কেন্দ্র করে কোনো সহিংস ঘটনার তথ্য আমাদের কাছে নেই। ঝুঁকিপূর্ণ কোনো মণ্ডপের তথ্য আমরা পাইনি।’ ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘কোনো হামলার আশঙ্কা যদিও নেই, তবে হামলা হলে যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের।’ পূজার সময় নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকার সব পুলিশ লাইনসের পাশাপাশি আলাদা পুলিশও প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কমিশনার বলেন, ‘ঢাকায় ২ তারকা চিহ্নিত ৮৬টি পূজামণ্ডপ, এক তারকাবিশিষ্ট ৭৭টি এবং সাধারণ শ্রেণির ৬১টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। এ সব পূজামণ্ডপের নিরাপত্তার জন্য আমাদের যেমন সাধারণ ফোর্স নিয়োজিত থাকবে তেমনি আয়োজকদের পক্ষ থেকে পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন থাকবে। যে সব পুণ্যার্থী আসবেন তাদের তল্লাশি করা হবে। যে সব জিনিস নিয়ে মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তারা যেন সেগুলো নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে, এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ব্যবস্থা নেবেন।’
‘পূজায় ইভটিজিং, মাদক প্রতিরোধ এবং পুরো শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা থাকবে। যে সব পূজামণ্ডবে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিসহ ভিভিআইপিরা আসবেন, সে সব মণ্ডপে এখন থেকেই আমাদের সার্ভিলেন্স রয়েছে। প্রতিটি স্থাপনা সুইপিং করা হবে। এ ছাড়া, রুফটপ থেকে শুরু করে পুরো রাস্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।’
বিসর্জনের দিন নির্দিষ্ট রুট ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিসর্জনস্থলে পৌঁছানো এবং সুশৃঙ্খলভাবে বিসর্জন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঝুঁকিপূর্ণ কোনো মণ্ডপ রয়েছে কিনা- জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপের এমন কোনো তথ্য নেই। ২৩৩টির বাইরেও পারিবারিক যে সব পূজামণ্ডপ রয়েছে, তারা চাইলে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেব।
শুক্রবার বিকালে দেবী বোধনের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।
এবার রাজধানীর ২৩৭টি পূজা অনুষ্ঠিত হবে, যার মধ্যে চারটি পারিবারিক। ২৩৩টি পূজার মধ্যে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, বনানী ও কলবাগানের সার্বজনীন দুর্গাপূজাকে ‘বিশেষ’ শ্রেণিভুক্ত করেছে ডিএমপি। এ ছাড়া সিদ্ধেশ্বরী কালীবাড়ি, রমনা কালীবাড়ি, বসুন্ধরা সার্বজনীন দুর্গাপূজা, উত্তরা ও কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটের পূজাকে ‘বৃহত্তম’ শ্রেণিতে রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া রাজধানীতে ৮৬টি মণ্ডপকে দুই তারকা, ৭৭টি মণ্ডপকে এক তারকা এবং ৬১টি মণ্ডপকে সাধারণ ক্যাটাগরিতে রেখেছে পুলিশ। পূজায় যে সব মন্দিরের পাশে মেলা হবে তা সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ডিএমপির পক্ষ থেকে।
গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বরা যে সব মন্দিরে যাবেন, সেখানে ডগ স্কোয়াড ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এ ছাড়া পূজার সময় ঢাকায় বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাও রেখেছে ডিএমপি। প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবকদের বিশেষ আর্মব্যান্ড পরার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
Posted ১১:২৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০১৯
America News Agency (ANA) | Payel