দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর রফতানিমুখী স্থলবন্দর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া বন্দরে রফতানি বাণিজ্যে ধস নেমেছে। একবছর আগেও এ বন্দরে রফতানিপণ্য বোঝাই ট্রাকের দীর্ঘ সারি দেখা যেত হরহামেশা। কার আগে কে পণ্য পাঠাবে এ নিয়ে ব্যবসায়ীরা থাকতেন ব্যতিব্যস্ত। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত্ত ব্যবসায়ী-শ্রমিকদের উপস্থিতিতে সরগরম থাকতো বন্দর এলাকা।
গত কয়েক মাসে পাল্টে গেছে সেই চিরচেনা দৃশ্য। রফতানি কমে যাওয়ায় বন্দরে নেই কোলাহল। ব্যবসায়ী-শ্রমিকদের উপস্থিতিও কমে গেছে অনেকাংশে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে এ বন্দরের শতাধিক আমদারি-রফতানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট ও বন্দর সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা। ব্যবসা কমে যাওয়ায় আমদানি-রফতানিকারকেরা উদ্বেগ উত্কণ্ঠায় দিন পার করছেন। রফতানি কমে যাওয়ার পেছনে ট্রানজিটের মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের সুবিধা, ভারতের অভ্যন্তরে সড়ক ও রেল যোগাযোগ ভাল হওয়া এবং ডলারের বিপরীতে রুপির অবমূল্যায়নের কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়সহ ৭টি রাজ্যে প্রবেশের অন্যতম দ্বার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর। ১৯৯৪ সালে চালু হয় এই স্থল বন্দরটি। এই স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন মাছ, পাথর, সিমেন্ট, ইট, বালি, শুটকী, প্লাস্টিক সামগ্রী, তুলাসহ প্রায় ৪২টি বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রফতানি হতো। এসব পণ্য রফতানি করে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে বাংলাদেশ।
এ বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি রফতানি হতো পাথর। প্রতিদিন ১০০/১৫০ ট্রাক পাথর ত্রিপুরায় রফতানি হতো। কিন্তু গত ৫/৬ মাসের ব্যবধানে পাথর রফতানি মারাত্মকভাবে কমে গেছে। এখন প্রতিদিন ১০/১৫ ট্রাক পাথর যায় ভারতে। মাছ রফতানিও আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ মোবারক হোসেন বলেন, আগে এ বন্দর দিয়ে রড রফতানি হতো কিন্তু এখন ট্রানজিটের মাধ্যমে ভারত রড ও জিসি শিট (টিন তৈরির শিট) নিয়ে যাচ্ছে। ফলে রড ও টিন রফতানি বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে অন্যান্য রাজ্যের রেল যোগাযোগ ভাল হওয়ায় সে দেশের ব্যবসায়ীরা কম খরচে রেলপথে পাথরসহ অন্যান্য পণ্য নিয়ে আসছে। অন্যদিকে ভারতে ডলারের দাম বেড়ে গিয়ে রুপির অবমূল্যায়ন হওয়ায় লোকসানের কারণেও আমদানিকারকরা আমদানি করতে চাইছে না। ফলে এ বন্দরে কর্মরত শতাধিক আমদানি-রফতানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট ও শ্রমিকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
আখাউড়া স্থল শুল্ক কর্মকর্তা মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, একবছরের তুলনায় রফতানি বাণিজ্য অনেক কমে গেছে। শুনেছি ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় সে দেশের ব্যবসায়ীরা রফতানি কমিয়ে দিয়েছেন।
সূত্র- ইত্তেফাক
Posted ৯:৪৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৫ অক্টোবর ২০১৬
America News Agency (ANA) | Payel