
এনা অনলাইন : | সোমবার, ২৫ জুন ২০১৮ | প্রিন্ট | 848 বার পঠিত
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশ থেকে আমদানি করা গাড়ির ওপর ২০ শতাংশ শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার টুইটারে এক বার্তায় তিনি এ কথা জানানোর পর ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। খবর রয়টার্স ও সিনহুয়া।
এর আগে ইউরোপ থেকে আমদানি করা ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করে। প্রতিশোধ নিতে ইউরোপও পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ২৮ সদস্যের অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রফতানি করা ৩২০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্যের শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। মার্কিন পণ্যের ওপর ইউরোপের আরোপিত শুল্ক শুক্রবার কার্যকর হওয়ার দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও ইইউ থেকে গাড়ি আমদানিতে শুল্কারোপের হুমকি দেয়া হলো।
ইইউ অঞ্চলে নির্মিত আমদানিকৃত গাড়ির ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে টুইটারে ট্রাম্প লেখেন, ‘ইইউ আরোপিত শুল্ক ও প্রতিবন্ধকতা যদি খুব শিগগিরই প্রত্যাহার করে না নেয়া হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র সেখান থেকে গাড়ি আমদানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।’ আমদানিকৃত গাড়ির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে গত মাসে একটি অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বর্তমানে ইইউ থেকে যাত্রীবাহী গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা শুল্কের পরিমাণ আড়াই শতাংশ এবং পিকআপ ট্রাক আমদানিতে ২৫ শতাংশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা গাড়িতে ১০ শতাংশ শুল্ক আদায় করে থাকে ইইউর দেশগুলো।
জার্মানির গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ফক্সওয়াগন, ডাইমলার এজি ও বিএমডব্লিউ এজি যুক্তরাষ্ট্রের কারখানায় গাড়ি নির্মাণ করে থাকে। শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, জার্মানি থেকে যে পরিমাণ গাড়ি যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি হয়, তার তুলনায় অনেক বেশি গাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত কারখানায় তৈরি করে থাকে এসব কোম্পানি।
ইইউ দেশগুলোয় নির্মিত গাড়ি আমদানিতে শুল্কারোপের হুমকি প্রকাশ হওয়ার পর ইউরোপের অটো স্টক ইনডেক্সে মারাত্মক পতন লক্ষ করা যায়। দিনের শেষ লেনদেনেও সূচকটি দশমিক ৫ শতাংশ নিম্নমুখী ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইটের পর তাত্ক্ষণিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি ফোর্ড মোটর এবং জেনারেল মোটরস কোম্পানির শেয়ারদরে পতন হলেও তা আবার চাঙ্গা হয়ে ওঠে; এমনকি দিনের শেষ লেনদেনে এসব কোম্পানির শেয়ারদর বেড়ে যায়।
আমদানিকৃত গাড়ি এবং গাড়ির যন্ত্রাংশের কারণে জাতীয় নিরাপত্তায় প্রভাব নিয়ে মার্কিন তদন্ত বিষয়ে জুলাইয়ে দুদিন জনমত গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস জানান, জুলাইয়ের শেষের দিকে অথবা আগস্টে তদন্ত কার্যক্রম সমাপ্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়; অবশ্য একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, অনুসন্ধান কার্যক্রম এখনো ‘প্রাথমিক পর্যায়ে’ রয়েছে।
গত মাসে এভারকোর আইএসআই এক গবেষণা নোটে জানায়, গাড়ি আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ ‘ইউরোপ অথবা চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি আমদানি ব্যবসা ধ্বংস করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।’ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের শীর্ষ গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলোর জোট দি অ্যালায়েন্স অব অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্সের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘শুল্কের কারণে গাড়ির দাম বেড়ে যাবে, ক্রেতাদের সক্ষমতা কমে আসবে এবং আমাদের বাণিজ্য সহযোগীদের এক অর্থে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণে আমন্ত্রণ জানানো হবে।’- বনিক বার্তা
Posted ১২:২১ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৫ জুন ২০১৮
America News Agency (ANA) | Payel