
এনা অনলাইন : | সোমবার, ১০ জানুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট | 12852 বার পঠিত
মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুৎ নেত্রী অং সান সু চিকে পৃথক দুই মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন মিয়ানমারের এক সামরিক আদালত। সোমবার মিয়ানামারের আইনি এক সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এই খবর জানানো হয়।
খবরে বলা হয়, ৭৬ বছর বয়সী এই নোবেল বিজয়ী বেসামরিক রাজনৈতিক নেত্রীকে ওয়াকিটকি রাখার মামলায় দুই বছর ও করোনাবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনী প্রচারণার জন্য দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে গ্রেফতারির পর সামরিক আদালতে চলমান মামলায় সু চির বিরুদ্ধে এটি দ্বিতীয় রায়।
এর আগে উত্তেজনা ছড়ানো ও করোনাবিধি লঙ্ঘনের পৃথক দুই মামলায় এক সামরিক আদালতে সু চিকে গত ৭ ডিসেম্বর চার বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরে দেশটির সামরিক জান্তা প্রধান মিন অঙ লাঙের আদেশে সু চির বিরুদ্ধে দুই বছরের কারাদণ্ড কমানো হয়।
ওই সময় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়, অং সান সু চির ‘বর্তমান অন্তরীণ থাকা অবস্থানেই’ এই দণ্ড ভোগ করবেন তিনি।
তবে সোমবারের রায়ের ক্ষেত্রেও একই আদেশ প্রযোজ্য হবে কি না এবং বর্তমানে সু চি কোথায় রয়েছেন, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও টেলিযোগাযোগের একটি আইন লঙ্ঘনসহ সু চির বিরুদ্ধে মোট ১১টি মামলা দায়ের করেছিলো সামরিক সরকার।
১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। পরে ১ আগস্ট জরুরি অবস্থার মেয়াদ ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেন জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং লাইং।
গত বছরের নভেম্বরে দেশটিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া অহিংস বিক্ষোভকে সামরিক উপায়ে জান্তা সরকার দমন করতে গেলে বিক্ষোভকারীরাও বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র হাতে নেয়।
গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট দেশের সাধারণ মানুষকে সামরিক জান্তার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঘোষণা দেয়।
১ ফেব্রুয়ারি থেকে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ ও সশস্ত্র তৎপরতায় সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে মিয়ানমারে এক হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী ও বিদ্রোহী নিহত হয়েছে বলে দেশটিতে মানবাধিকার নজরদারি করা সংস্থাগুলো জানায়। একইসাথে দেশটিতে ১০ হাজারের বেশি লোক গ্রেফতারির শিকার হয়।
অপরদিকে সামরিক বাহিনী নিহতের এই সংখ্যা অস্বীকার করে আসছে এবং সংঘর্ষে বিপুল সৈন্য নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা
Posted ৩:২৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১০ জানুয়ারি ২০২২
America News Agency (ANA) | ANA