
ঢাকা : | শনিবার, ২৫ মার্চ ২০১৭ | প্রিন্ট | 835 বার পঠিত
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ী এলাকায় জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহল ঘিরে অভিযান চলছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সেখানে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়।
জঙ্গিবিরোধী এ অভিযানের শুরুতে ওই ভবনে আটকে ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হয় দুপুর ২টা পর্যন্ত। এরপর শুরু হয় মূল অভিযান।
দুপুর ২টা থেকে শুরু হয় মুহুর্মুহু গুলির শব্দ। এক পর্যায়ে সাউন্ড গ্রেনেড ও গ্রেনেডের শব্দও শোনা যায় ভবনের আশপাশের এলাকা থেকে। পৌনে ৩টার দিকে ভবনটির পাঁচতলা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়।
বেলা আড়াইটার দিকে তিনজন সেনা সদস্যকে আহত অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। বেলা ২টায় গুলি-বোমার আওয়াজ শোনার আগে একটি অ্যাম্বুলেন্সকে পুলিশ বেষ্টনি অতিক্রম করে ভেতরে ঢোকানো হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ওই জঙ্গি আস্তানায় অন্তত একজন নারী ও একজন পুরুষ জঙ্গি রয়েছেন বলে তারা ধারণা করছেন। কাউছার আলী ও মর্জিনা বেগম নামে ওই দুইজন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে কয়েক মাস আগে বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন।
সকালে অভিযান শুরুর প্রায় আধা ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে সাংবাদিকদের বলেন, সেনা কমান্ডো এই অভিযান চালাচ্ছে এবং সোয়াত সহায়তা করছে।আতিয়া মহলে অভিযান চলছে, গুলি-বিস্ফোরণের শব্দ
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযান শুরুর পর ওই ভবনে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা চলে। বেলা ২টা পর্যন্ত ৭৬ জনকে উদ্ধার করে পাশের একটি বাড়িতে জড়ো করে রাখা হয়।
এর আগে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে পরপর দুটি গুলির শব্দ শোনা গেছে। এরপর দীর্ঘ সময় আর কোনো শব্দ শোনা যায়নি।
অভিযানের বিষয়টি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রোকনউদ্দীন সমকালকে নিশ্চিত করেন।
সেনাবাহিনী এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’; এর আগে ঘটনাস্থলে সোয়াত এই অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন স্প্রিং রেইন’।
শনিবার সকালে অভিযান শুরুর আগেই গণমাধ্যমকর্মীসহ আশপাশের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয় নিরপাদ দূরত্বে। বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ। ফায়ার ব্রিগেডের দুটি গাড়ি রাতেই ঘটনাস্থলে এনে রাখা হয়েছিল। সকালে সাঁজোয়া যান ও অ্যাম্বুলেন্স দেখা যায়।
অভিযানের সরাসরি সম্প্রচার না করতে আইএসপিআরের পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এরআগে শুক্রবার সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ী এলাকায় জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলের চারিদিকে সোয়াত ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল অবস্থান নেয়। অভিযানে সহযোগিতা করার জন্য সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দল সেখানে পৌঁছে। শুক্রবার রাতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার গোলাম কিবরিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শুক্রবার ওই ভবন থেকে জঙ্গিদের বের হয়ে আত্মসমর্পণ করতে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে আহ্বান জানানো হলেও তাতে সাড়া মেলেনি। বরং পুলিশের আহ্বানের জবাবে ওই ভবনের ভেতর থেকে এক নারীকে চিৎকার করে বলতে শোনা গেছে— ‘আমরা আল্লাহর পথে আছি, আর পুলিশ শয়তানের পথে আছে।’ এরপর পাঁচতলা ওই ভবন ঘিরে রাখে পুলিশ।আতিয়া মহলে অভিযান চলছে, গুলি-বিস্ফোরণের শব্দ
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শিববাড়ির উস্তার মিয়ার আতিয়া মহলের নামের বাড়িতে তল্লাশির সময় নিচ তলা থেকে পুলিশ ও র্যাবকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করা হয়।
পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে অভিযান শুরু করে বলে জানান সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রোকনউদ্দীন।
স্থানীয়রা জানন, শুক্রবার সকালে সেখানে থেমে থেমে গুলির ঘটনা ঘটে।
Posted ৬:১৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৫ মার্চ ২০১৭
America News Agency (ANA) | Payel