
এনা : | সোমবার, ১২ আগস্ট ২০২৪ | প্রিন্ট | 12765 বার পঠিত
পৃথিবী এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। প্রকৃতির ভিন্ন রঙ ও রূপে মুগ্ধ হয় সকলে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই পৃথিবীর মনোমুগ্ধকর স্থান সম্পর্কে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। নতুন কিছু দেখার আশায় চষে বেড়াচ্ছে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। আর প্রকৃতি একের পর এক উন্মুক্ত করছে তার বৈচিত্রময় সৌন্দর্য্যের আবরণ। প্রকৃতির বৈচিত্রময় রুপে মোহিত হবার আনন্দ পেতে সেইসব দর্শনীর্শয় স্থানগুলো বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ প্রিয় মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে থাকা এমন ১২টি স্থান।
১. অ্যারিজোনার এন্টিলোপ ক্যানিয়ন
এন্টিলোপ ক্যানিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় অবস্থিত। এর অনন্য বৈশিষ্ট্য বিশ্বের ভ্রমনপ্রিয় মানুষের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। মিলিয়ন বছর পূর্বে পানি প্রবাহের কারণে সৃষ্টি হয় এই গভীর গিরিখাতের। যার দেয়ালে সূর্যের আলো পৌঁছে অদ্ভুত আলোছায়া এবং রঙের বিচিত্রতা তৈরি করে। যা পর্যটকদের মোহিত করে।
২. লাদাখের প্যাংগং লেক
অনন্য রূপের আধার প্যাংগং লেক সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৪ হাজার ফুট উপরে পাহাড় এবং মরুভূমি বেষ্টিত ভারত চীন সীমান্তবর্তী লাদাখে অবস্থিত। ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে সৌন্দর্য মণ্ডিত এই লেক ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে। প্যাংগং লেক ভূ-নিসর্গের জন্য বিখ্যাত। বছরের বেশিরভাগ সময় প্যাংগং লেকে যাওয়ার পথ বন্ধ থাকে বিধায় জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস এই লেকে ভ্রমণ করার উপযুক্ত সময়।
৩. বলিভিয়ার সালার দে ইয়ুনি
সালার দে ইয়ুনি বলিভিয়ার বৃহত্তম লবণভূমি হিসেবে পরিচিত। যা বর্ষাকালে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আয়নায় পরিণত হয়।আকাশের প্রতিচ্ছবি স্বচ্ছ লবণ সমতলে এমনভাবে পড়েছে যা মানুষকে মুগ্ধ করে। এটির বিস্তার প্রায় ১০ হাজার ৫৮২ বর্গকিলোমিটার জুড়ে। ভ্রমণপ্রিয় মানুষ এবং ফটোগ্রাফাররা পৃথিবীর অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা লবণের মরুভূমি দেখতে ছুটে আসে।
৪. মালদ্বীপের বারোস আইল্যান্ড
মালদ্বীপ অসংখ্য ছোট বড় দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এখানে নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা অনেক জায়গা রয়েছে, যা পর্যটকদের মন কাড়ে। মালদ্বীপের এক প্রাকৃতিক নিসর্গ বারোস আইল্যান্ড। হাজার ব্যস্ততার মাঝে কিছুটা অবসর যাপনের জন্য বারোস আইল্যান্ড এ আছে সমস্ত আয়োজন। বিশাল আকাশ, সাগরের গভীরতা আর প্রকৃতির মায়াজাল যেন আটকিয়ে ফেলেছে বারোস আইল্যান্ডকে। যা মোহিত করে সবাইকে।
৫. নেদারল্যান্ডের কিউকেনহফ
নেদারল্যান্ডের কিউকেনহফ শহর বিশ্বের বৃহত্তম ফুল বাগান হিসেবে পরিচিত। এ শহরের যাত্রা শুরু হয় ১৫শ শতকে। কিউকেনহফ বাগানের বর্তমান জমির পরিমাণ প্রায় ৮০ একর যা থেকে প্রতি বছরে ৭০ লাখের বেশি টিউলিপ ফুল উৎপাদন করা হয়। প্রতিটি টিউলিপ ফুলের জাত ভিন্ন। কিচেন গার্ডেন ও গার্ডেন অব ইউরোপ হিসেবে ও বিখ্যাত কিউকেনহফ। বাগানে প্রায় ৩০ রকমের ফুল রয়েছে। প্রতিবছর মার্চের মাঝামাঝি থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ভ্রমনপিপাসু পর্যটকদের জন্য বাগানটি উন্মুক্ত থাকে।
৬. ভিয়েতনামের হা লং বে
হা লং বে ভিয়েতনামের কুয়ানিং প্রদেশে অবস্থিত। এর আয়তন ১৫৫৩ বর্গকিলোমিটার। চুনাপাথরের পাহাড় এবং স্বচ্ছ নীল পানি হা লং বের সৌন্দর্য হাজারগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে রয়েছে কয়েকটি কৃত্রিম গুহা ও ভাসমান গ্রাম। প্রায় ২ হাজার ছোট ছোট চুনাপাথরের দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত হা লং বে। ১৯৯৪ সালে হা লং বেকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
৭. আইসল্যান্ডের নর্দার্ন লাইটস বা অরোরা
নর্দার্ন লাইটস বা অরোরা বলতে বোঝায় আকাশে প্রাকৃতিক রঙের ছড়াছড়ি। যা প্রকৃতিকে এক নতুন রূপদান করে। সুইডেন, নরওয়ে, রাশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, স্কটল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও গ্রিনল্যান্ড থেকে সন্ধ্যা ও রাতের বেলায় দেখা যায় নর্দার্ন লাইটস। নর্দার্ন লাইটস দেখার জন্য জনপ্রিয় স্থান হিসেবে পরিচিত আইসল্যান্ডের পিংভেলার ন্যাশনাল পার্ক। প্রতি বছর হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক অরোরার সৌন্দর্য দেখতে ছুটে যায়।
৮. জাপানের উইস্টেরিয়া টানেল
প্রশান্তির জায়গা হিসেবে পরিচিত উইস্টেরিয়া টানেল জাপানের কাওয়াচি ফুজি গার্ডেনে অবস্থিত। এ যেন পৃথিবীতেই স্বর্গীয় অনুভূতি পাওয়া। এই টানেলের সৌন্দর্যে অভিভূত হতে হলে এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে কাওয়াচি ফুজি গার্ডেনে যেতে হবে। এই বাগানটি ব্যক্তি মালিকানাধীন শুধুমাত্র উইস্টেরিয়া ফুলের মৌসুমে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
৯. থাইল্যান্ডের ফি-ফি দ্বীপপুঞ্জ
নান্দনিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি ফি ফি দ্বীপপুঞ্জ। ভ্রমণ পিপাসুদের ভ্রমণের সুবিধার জন্য এ দ্বীপে রয়েছে ক্রুজ, ক্লিফ ডাইভিং, রক ক্ল্যাইম্বিং এবং মাছ ধরার ব্যবস্থা। মায়া উপসাগর ফি-ফি আইল্যান্ডের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ন স্থান।
১০. ফিলিপাইনের পালওয়ান, সিক্রেট লেগুন
পালওয়ান দ্বীপ ফিলিপাইনের স্বর্গ হিসেবে বিখ্যাত। দ্বীপের সাগরে জেগে ওঠা লাইমস্টোনের পাহাড়গুলো প্রকৃতির এক অনন্য সৃষ্টি। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত পালওয়ান দ্বীপ। এই দ্বীপে আছে ভূ-গর্ভস্থ নদী এবং চিত্তাকর্ষক চুনা পাথরের গুহা।পাহাড়, উপত্যকা ও বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল এর সৌন্দর্যের মায়াজালে আবদ্ধ পালওয়ান সৈকত পৃথিবীর জনপ্রিয় সৈকত গুলোর মধ্যে অন্যতম।
১১. চীনের ঝাংজিয়াজি ন্যাশনাল পার্ক
ঝাংজিয়াজি ন্যাশনাল ফরেস্ট পার্ক চীনের হুনান প্রদেশের তিয়ানমেন পর্বতে অবস্থিত। পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য পার্কে বিভিন্ন স্থাপনার পাশাপাশি রয়েছে ১৪১০ ফিট উঁচুবিশিষ্ট নির্মিত কাচের তৈরি সেতু। এছাড়া তিয়ানমেন পর্বত এবং এর বুনো সৌন্দর্য সকলকে আকৃষ্ট করে।
১২. নেপালের পোখারা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি ফেওয়া লেকে জড়িয়ে থাকা পোখারাকে বলা হয় নেপালের ভূ-স্বর্গ ও নেপাল রানী।ভ্রমণ কারীদের আকর্ষণ করার জন্য পোখারায় আছে প্রাকৃতিক ঝর্ণা, প্যারাগ্লাইডিং এবং ঘোড়ায় চড়ার ব্যবস্থা। পাহাড়ের চূড়া থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য দেখতে হাজার হাজার সৌন্দর্যপ্রেমীরা ভিড় করেন পোখারায়।
Posted ১:৩৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১২ আগস্ট ২০২৪
America News Agency (ANA) | ANA