শুক্রবার ১৩ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার

এনা :   |   শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   12756 বার পঠিত

যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার

যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে নিরাঙ্কুশ জয় পেয়েছে কিয়ার স্টারমারের দল লেবার পার্টি। তাই তাকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন রাজা দ্বিতীয় চার্লস।

শুক্রবার (৫ জুলাই) নির্বাচনে জয়ের পর বাকিংহাম প্রাসাদে রাজার সঙ্গে দেখা করতে যান কিয়ার স্টারমার। সেখানেই তিনি তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন। খবর বিবিসির।

জানা গেছে, গত ৪ জুলাই যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লেবার পার্টি ৬৫০ আসনের মধ্যে ৪১২টি আসনে জয় পেয়েছে। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১২১টি আসন। দেশটির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য কোনো দলের প্রয়োজন হয় ৩২৬ আসন। এদিকে নির্বাচনে ভারডুবিতে টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ঋষি সুনাক।

নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর কিয়ার স্টারমার তার ভাষণে বলেন, জনগণ সুচিন্তিতভাবে পরিবর্তন এবং জনগণের সেবামূলক রাজনীতির জন্য ভোট দিয়েছে। তবে কোনো দেশকে পরিবর্তন করা সুইচ টেপার মতো বিষয় নয়। এর জন্য সময় প্রয়োজন হবে। তবে পরিবর্তনের জন্য কাজ শুরু করা হবে।

তিনি বলেন, ‘আমার মতো খেটে খাওয়া পরিবারগুলো যাতে জীবন চালাতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’

কে এই কিয়ার স্টারমার?

রাজধানী লন্ডনের বাইরে সারেতে ১৯৬২ সালের ২ সেপ্টেম্বর একটি বামপন্থী শ্রমিক পরিবারে জন্ম কিয়ার স্টারমারের । জন্মের পরপরই লেবার পার্টির সঙ্গে যেন তার একটি যোগসূত্র তৈরি হয়ে যায়। কারণ তার নামকরণটি হয়েছিল স্কটিশ ট্রেড ইউনিয়নিস্ট কিয়ার হার্ডির নামানুসারে, যিনি লেবার পার্টির প্রথম নেতা ছিলেন।

স্টারমার তার পরিবারের প্রথম স্নাতক। প্রথমে তিনি লিডস ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন করেন এবং পরবর্তীতে অক্সফোর্ড থেকে আইন বিষয়ে পড়ালেখা সম্পন্ন করেন। স্টারমার একজন মানবাধিকার আইনজীবী। যুক্তরাজ্যের পাবলিক প্রসিকিউশন দপ্তরের পরিচালক পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ফৌজদারি বিচার প্রক্রিয়ায় অবদান রাখায় ‘নাইট’ উপাধি পেয়েছেন স্টারমার।

খুব অল্প বয়স থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কিয়ার স্টারমার। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি যোগ দেন লেবার পার্টি ইয়ং স্যোশালিস্ট দলে। ২০২০ সালের এপ্রিলে লেবার পার্টির নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন স্টারমার। জেরেমি করবিনের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। দায়িত্ব নিয়েই যুক্তরাজ্যের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসেন স্টারমার। কয়েক বছরের মাথায় ভোটের লড়াইয়ে এর সুফল পেলেন তিনি।

সমর্থকদের চোখে স্টারমার একজন বাস্তববাদী মানুষ। ভরসা করার মতো রাজনীতিবিদ। আর সমালোচকদের অনেকের মতে, স্টারমার চৌকস নন। বরং তিনি অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়া একজন রাজনীতিক।

সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম দ্য সান আয়োজিত এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে স্টারমার বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশগুলো থেকে যেসব মানুষ আসছে, তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে না।’ কনজারভেটিভ সরকারের রুয়ান্ডা অভিবাসী প্রত্যাবাসন প্রকল্পের সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

স্টারমারের এমন মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়ে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি সম্প্রদায়। প্রতিবাদ জানানো হয়। এমন মন্তব্যে বিপাকে পড়েন এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থীরা। এবার লেবার পার্টির আটজনসহ সব মিলিয়ে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক ভোটে লড়ছেন।

তুমুল সমালোচনার মুখে সুর নরম করেন স্টারমার। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে বাংলাদেশকে আলাদাভাবে বোঝাতে চাইনি। আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও আমাদের দেশের প্রতি বাংলাদেশি কমিউনিটির অবদানকে আমি ব্যাপকভাবে মূল্যায়ন করি।’

এদিকে রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, নির্বাচনে জয়ী হতে জনগণের জন্য সরকারি সেবার মান কমে যাওয়া ও জীবনযাত্রার মান নিয়ে মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়েছেন স্টারমার। নির্বাচনী প্রচারণায় বলেছিলেন, লেবার পার্টি পরিবর্তন আনবে। যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন, তা থেকে শিগগিরই উত্তোলনের কোনো জাদুমন্ত্র তার কাছে নেই। সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে ৬১ বছর বয়সী এ আইনজীবীর জন্য।

Facebook Comments Box

Comments

comments

Posted ৩:৫১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪

America News Agency (ANA) |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

[abm_bangladesh_map]
Editor-in-chief :
Sayeed-Ur-Rabb
Corporate Headquarter :

44-70 21st.# 3O1, LIC. New York-11101. USA,

06463215067

americanewsagency@gmail.com

Copyright © 2019-2025Inc. America News Agency (ANA), All rights reserved.ESTD-1997