
অনলাইন ডেস্ক : | বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট | 920 বার পঠিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তার ঐতিহ্য সমুন্নত রেখে এগিয়ে যাবে এবং একদিন বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মর্যাদা লাভ করবে। ইতিমধ্যে বিজিবি ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফয়ের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য সীমান্তে হত্যা কমেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে বিজিবি দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ড এ বাহিনীর ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। সে সময় সরকার গঠনের পরপরই বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের মতো ন্যক্কারজনক ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি আমাদের মোকাবিলা করতে হয়। আপনাদের সকলের সহযোগিতায় সেই সংকটময় পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ বাহিনীকে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন-২০১০ আমরা পাস করেছি। এই বাহিনীকে একটি আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা ব্যাপক সংস্কার ও উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার বিজিবি’র জনবল বৃদ্ধি করেছে। বিজিবিতে ২০০৯ সাল থেকে এ যাবত্ ২৪ হাজার ২৩৪ জন জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। বিভিন্ন পদে ২৬ হাজার ২২১ জন বিজিবি সদস্যকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। বিজিবিতে নারী সদস্য নিয়োগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজিবি’তে ৮৮তম ব্যাচে প্রথমবারের মতো ৯৭ জন নারী সৈনিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিজিবি হাসপাতাল, ঢাকার তত্ত্বাবধানে ৫০ জন নারী সৈনিককে মেডিক্যাল এ্যাসিসটেন্ট প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ বছর ৮৯তম ব্যাচে আরো ৯৩ জন নারী সৈনিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং ৯০তম ব্যাচে আরো ১০০ জন নারী সৈনিক ভর্তির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত এবং মিয়ানমারের সাথে ৪৭৯ কি.মি. অরক্ষিত সীমান্ত এলাকায় নতুন ৪টি ব্যাটালিয়ন এবং ৫৫টি বিওপি নির্মাণের মাধ্যমে ৩৭০ কি.মি. সীমানা ইতিমধ্যে নজরদারীতে আনা হয়েছে। বিজিবি’ সদস্যদের কল্যাণের জন্য হাসপাতাল, বিজিবি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট নির্মাণ এবং সীমান্ত ব্যাংক গঠন করা হয়েছে। বিজিবি কল্যাণ ট্রাস্ট, বিজিবি পাওয়ারে কোম্পানি এবং সীমান্ত সম্ভার মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিজিবি সদর দপ্তরের বীর উত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন এবং একটি সুসজ্জিত খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন। বিজিবি’র উপমহাপরিচালক আমিরুল ইসলাম শিকদার কমান্ডার হিসেবে প্যারেড পরিচালনা করেন। মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, তিনবাহিনী প্রধানগণ, বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ এবং পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ৫৯ জন বিজিবি সদস্যের মাঝে বীরত্বপূর্ণ এবং কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিজিবি পদক বিতরণ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী চিত্তাকর্ষক ‘ট্রিক ড্রিল’ এবং ‘ডগ স্কোয়াড ডিসপ্লে’ উপভোগ করেন।
কর্মকর্তা ও সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ
বিজিবি’র বন্ধনকে দৃঢ় করবে
পরে বিজিবি দিবস উপলক্ষে বিজিবি সদর দপ্তর পিলখানার বীরউত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে বিজিবি আয়োজিত বিশেষ দরবারে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বিজিবি’র সদস্যদের আনুগত্য ও বিশ্বস্ততা প্রশ্নাতীত আখ্যায়িত করে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘বিজিবি’র সদস্য হিসেবে আপনাদের আনুগত্য ও বিশ্বস্ততা প্রশ্নাতীত। কর্মকর্তা ও সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ, শৃঙ্খলাবোধ, মানবিকতা এবং সর্বোপরি পারস্পরিক সহানুভূতিশীলতাই এই বাহিনীর বন্ধন দৃঢ়তর করবে।’ বিশেষ দরবারে আরো বক্তৃতা করেন বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন।
এনা/পা/ইতে
Posted ১:২৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬
America News Agency (ANA) | Payel