বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

অনিয়ম হলে ব্যবস্থা

দশ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি অব্যাহত রাখা হবে : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

এনা ডেস্ক :   বুধবার, ০৫ অক্টোবর ২০১৬ 974
দশ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি অব্যাহত রাখা হবে : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্রাম পর্যায়ে হত দরিদ্রদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যতদিন মানুষের প্রয়োজন থাকবে ততদিন আমরা এই খাদ্য দিতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করি। তবে আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের আর্থিক সহায়তা বাড়ছে। দারিদ্রের হার হ্রাস পেয়েছে। কাজেই হয়তো অদূর ভবিষ্যতে কাউকে সাহায্য দিতে হবে না। তবে যারা প্রতিবন্ধী, যারা একেবারে বয়ঃবৃদ্ধ, কর্মক্ষম না তাদেরকে আমরা এই সাহায্য দিয়ে যাব। এই চাল বিক্রিতে অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে, যারা ডিলার তাদের ডিলারশিপ বাতিল করে দেয়া হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধি কোনো অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
সংসদে প্রশ্নোত্তরে আজ বুধবার সরকারি দলের ইসরাফিল আলমের এক সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই আমি ঘোষণা দিয়েছি দশ টাকা কেজি ধরে চাল বিক্রির কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত রয়েছে। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে সবসময় দরিদ্র বান্ধব কর্মসূচি নেয়। আমরা যখন ১৯৯৬ সালে সরকারে এসেছিলাম তখনো আমরা মানুষকে বিনা পয়সায় খাদ্য বিতরণ করতাম এবং প্রতি রমজান মাসে আমরা ১০ কেজি করে চাল বিনা মুল্যে হত দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করি। ১৯৯৮ সালে ভয়াবহ বন্যার সময় অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা বলেছিল বাংলাদেশে দুই কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম- একটি মানুষও না খেয়ে কষ্ট পাবে না। আমরা হাতে তৈরি খাদ্যসহ বিভিন্ন খাদ্য সমগ্রী, পানি মানুষের কাছে পৌঁছে দিই এবং বন্যা ও বন্যা পরবর্তী দীর্ঘ নয় মাস আমরা ২০ টাকা কেজি করে চাল বিনা পয়সায় ৫৫ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েলাম। ঢাকা শহরে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দরিদ্র মানুষের মাঝেও এই চাল পৌঁছে দিয়েছিলাম। কাজেই যতদিন মানুষের প্রয়োজন থাকবে ততদিন আমরা এই খাদ্য দিতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করি। তবে আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের আর্থিক সহায়তা বাড়ছে। দারিদ্রের হার হ্রাস পেয়েছে। কাজেই হয়তো অদূর ভবিষ্যতে কাউকে সাহায্য দিতে হবে না। তবে যারা প্রতিবন্ধী, যারা একেবারে বয়ঃবৃদ্ধ, কর্মক্ষম না তাদেরকে আমরা এই সাহায্য দিয়ে যাব।
মীর শওকত আলী বাদশার এক সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ টাকা করে চাল খাওয়াব এটা আমরা নির্বাচনী ইশতিহারে বলিনি। এটা ছিল ‘৯৬ সালে নির্বাচনে আগে। তখন এটা আমি নির্বাচনী বক্তৃতায় ঘোষণা দিয়েছিলাম। তবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এটা আমাদের সরকারের সবসময় একটা লক্ষ্য থাকে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করি। ‘৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। আমরা সেই ঘাটতি পুরণ করি এবং দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। ২০০১ সালে যখন আমরা পাঁচ বছর মেয়াদ সম্পন্ন করি ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুদ রেখে আমরা এসেছিলাম। দুর্ভাগ্য ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট যখন ক্ষমতায় আসে দেশকে তারা আবার খাদ্য ঘাটতির দেশে পরিণত করে। ২০০৯ সালে যখন আমরা আবার সরকার গঠন করি তখন আবার দেখি বাংলাদেশে আবার প্রায় ৩০ লাখ মেট্রিক টনের মতো খাদ্য ঘাটতি। এখন আর খাদ্য ঘাটতি নেই। খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ। এমনকি আমরা খাদ্য রফতানি করবারও সক্ষমতা অর্জন করেছি। আর জনগনকেও আমরা সবসময় খাদ্য দিয়ে যাই। এই যে ৫০০ জন সুবিধাভোগির জন্য একজন করে ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং জনপ্রতিনিধিরাসহ যারা তালিকা করছেন এই তালিকায় কোনো জায়গায় যদি অনিয়ম থাকে অর্থাৎ যাদের জন্য অর্থাৎ হত দরিদ্রকে না দিয়ে অন্য কাউকে দিয়ে থাকে সংসদ সদস্যরা যেন তাদের স্ব স্ব এলাকায় তালিকাগুলো যেন পরীক্ষা করে দেখেন। পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তারাও যাদের সামর্থ আছে তাদের নাম কেটে যাদের সামর্থ নেই তাদের নাম তালিকাভূক্ত করবেন। তারপরও কেউ অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা ডিলার তাদের ডিলারশিপ বাতিল করে দেয়া হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধি তারাও কোনো অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের এক সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছি তখন মানুষের খাদ্য সমস্যা থেকে শুরু করে মানুষের জীবনে আশা আকাংখা পুরণ করে মানুষের জীবন থেকে হতাশা দূর করে একটা আশার আলো আমরা দেখাতে সক্ষম হয়েছি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর কিন্তু সেই অবস্থা ছিল না। হয়তো কিছু মানুষ আনন্দ উপভোগ করেছে, স্বচ্ছলতা অর্জন করেছে, অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে, জীবনকে তারা উপভোগ করেছে দেশের অধিকাংশ মানুষকে বঞ্চিত করে। এই বঞ্চনা থেকে মুক্ত করে দিয়ে তাদের জীবনকে হাশিখুশিতে ভরে দেয়া-এটাই হচ্ছে আমার একমাত্র কাজ।
এনামুল হকের পক্ষে ইস্রাফিল আলমের উত্থাপিত তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে জনগোষ্ঠির জন্য স্থানীয় কমিটির মাধ্যমে ৫০ লাখ পরিবারকে কার্ড প্রদান করে কার্ডের প্রতিবছর সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এবং মার্চ -এপ্রিল এই পাঁচ মাস প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল বিক্রির কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এ কর্মসূচি দীর্ঘ মেয়াদে চলবে। এতে দেশের আড়াই থেকে তিন কোটি লোক উপকৃত হবে। এ দেশে আর কেউ না খেয়ে কষ্ট পাবে না। এ কর্মসূচি নাম হচ্ছে ‘খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি’ এবং শ্লোগান হচ্ছে ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’। এই কর্মসূচি আমার বিশেষ উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম কার্যক্রম।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই নির্বাচিত হয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে তখনই জনগণ বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠির কল্যাণে কাজ করেছে। আমাদের সরকারের দারিদ্র বান্ধব কর্মসূচি প্রান্তিক জনগণের জন্য নিবেদিত। দেশের সব মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে আমাদের অন্যতম কর্মসূচি হিসেবে স্বল্প মুল্যে মহানগর, বিভাগ, জেলা পর্যায়ে ও এমএস খাতে আটা বিক্রয় কাযক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সেই সাথে আমরা সারাদেশে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে গ্রামীণ জনপদের অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিকেজি ১০ টাকা করে কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য বিতরণ কার্যক্রম চালু করেছি। গত ৬ সেপ্টেম্বর আমি কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় এ কর্মসূচি উদ্বোধন করছি।
শরীফ আহমেদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জবাবদিহীমুলক, গণতান্ত্রিক মুল্যবোধসম্পন্ন, জনবান্ধব সরকারি সেবা ব্যবস্থপনা এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের আইনসম্মত নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি কর্মচারি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আইনের খসড়া ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভা বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন লাভ করেছে।
মো: হাবিবুর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থার ফলে দেশে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আইন শৃংখলা বাহিনী তৎপর থাকার ফলে দেশে সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গীবাদ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। ফলে দেশের সার্বিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি দৃঢ়তর হচ্ছে।

Facebook Comments Box

Comments

comments

Posted ১০:১৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৫ অক্টোবর ২০১৬

America News Agency (ANA) |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

 

President/Editor-in-chief :

Sayeed-Ur-Rabb

 

Corporate Headquarter :

 44-70 21st.# 3O1, LIC. New York-11101. USA, Phone : +6463215067.

Dhaka Office :

70/B, Green Road, 1st Floor, Panthapath, Dhaka-1205, Phone : + 88-02-9665090.

E-mail : americanewsagency@gmail.com

Copyright © 2019-2024Inc. America News Agency (ANA), All rights reserved.ESTD-1997