রঙিন চুল আজকের ফ্যাশনের অন্যতম অংশ। স্বর্ণকেশী নারী একসময় শুধু পশ্চিমের দেশগুলোতেই দেখা যেত। এ অঞ্চলে এই চুলের কথা চিন্তাও করা যেত না। কিন্তু বিজ্ঞান অনেক কিছুর মতো এই অসম্ভবকেও সম্ভব করেছে। বিজ্ঞানের বদৌলতে এখন যে কেউ সোনালি, রুপালি, লাল, নীল, বেগুনি যেকোনো রঙেই রাঙিয়ে নিতে পারেন নিজের চুল। নিজের সাজে সহজেই ঘটাতে পারেন সৌন্দর্য ও আধুনিকতার সমন্বয়। চুলের রঙ নিয়ে কথা বলেছেন রূপ বিশেষজ্ঞ আমিনা হক।
চুলে কালার করাটা দুই থেকে তিন ধরনের হয়। অনেকে চুলে বেজ কালার হিসেবে কালার করেন। আমাদের দেশে সাধারণত বেজ কালার হিসেবে লাইট কালারগুলো কেউ নিতে চান না। ডার্ক কালার যেমন ডার্ক ব্রাউন্ড মেহগনি, বার গ্যান্ডি ব্লাক এসব কালারই বেশি ব্যবহার করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যাদের বয়স একটু বেশি তারাই এই কালার করে থাকেন।
কম বয়সীরা সব ধরনের কালারই ট্রাই করতে পারেন। যারা ফর্সা তারা ব্রাউন, অ্যাশ, গোল্ডেন, ব্লন্ড- এসব কালার বেছে নিতে পারেন। আর যাদের রঙ একটু চাপা তার অ্যাশ, গোল্ডেন- এ ধরনের রঙগুলো সাধারণত এড়িয়ে যান। তবে ট্রাই করে দেখতে পারে।
তরুণরা সাধারণত চুলে হাইলাইটস করেন। মাথার সামনে, পেছনে, আগায়, গোড়ায় অল্প কয়েক গোছা চুল নিয়ে হাইলাইটস করে থাকেন।
এ সময় অবশ্য হাইলাইটসের ধারণায় অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে। চিরাচরিত কালারের বাইরে সবুজ, নীল, প্যাস্টেল, লাল, ম্যাজেন্টা কালারগুলো বেশ চলছে। কখনো একরঙ আবার কখনো মাল্টিকালার ব্যবহার করছেন তরুণীরা চুল হাইলাইটস করার জন্য।
চুল রঙিন করার সাথে চুলের প্রতি বাড়তি যত্নে নেয়ার প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়। কারণ এ সময় চুলের বাড়তি যত্ন না নিলে চুল খুব সহজেই রুক্ষ হয়ে যায়। ফলে চুলের আগা ফেটে যাওয়া, চুল ভেঙে যাওয়া, চুল পরা- এসবও দেখা দিতে পারে। তাই চুলের যত্নে কিছু কাজ করা জরুরি।
ট্রিম করুন : চুল কালার করার পর যদি আগা ফাটতে দেখা যায় বা চুল রুক্ষ হয়ে যায় তাহলে নিয়মিত চুল ট্রিম করতে হবে। এতে চুরের গ্লোথ ভালো থাকবে।
ডাই করার আগে চুল শ্যাম্পু করবেন না : শ্যাম্পু করা চুলের চেয়ে ব্লাক চুলে ডাই করা ভালো ফল দেয়।
ভালো কোম্পানির শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার কেনার আগে সেটি হাইলাইটস করা বা ডাই করা চুলের জন্য কার্যকর কি না, সেই বিষয়টি যাচাই করে নিন।
ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার : চুলের কালার দীর্ঘ দিন ধরে রাখতে চাইলে চুলে ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করুন এবং শাওয়ারের নিচে দীর্ঘক্ষণ মাথা রাখবেন না। বরং মগ দিয়ে ঢেলে পানি চুলে ব্যবহার করুন।
শ্যাম্পু কম করুন : যারা চুলে কালার ব্যবহার করেন, তারা ঘন ঘন শ্যাম্পু করবেন না। কারণ বারবার শ্যাম্পু করলে চুলের কালার দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
সালফেট এড়িয়ে চলুন : সালফেট চুলের কালারের জন্য ক্ষতিকর। তাই যে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনারে সালফেট আছে সেগুলো কেনা থেকে বিরত থাকুন।
তেল ব্যবহার করুন : কালার করা চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে নিয়মিত চুলে তেল ম্যাসাজ করুন। তেল যেমন কালার ধরে রাখতে সাহায্য করে, তেমনি চুল রাখে ঝরঝরে।
হিট প্রোটেকটর ব্যবহার করুন : কালার করা চুলে আয়রনিং, কার্লি বা ব্লো ড্রায় যাই করতেন চান না কেন, হিট প্রোটেকটর ব্যবহার করুন। চুল আরো ড্যামেজ হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
এসপিএফ ব্যবহার করুন : যারা রোদে বেশি ঘোরাফেরা করেন তারা কালার করা চুলের জন্যও এসপিএফ যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করবেন। এতে চুলের স্বাস্থ্য ও কালার দুই-ই ভালো থাকবে।
ক্লোরিন এড়িয়ে চলুন : যারা নিয়মিত পুলে সাঁতার কাটেন, তারা অবশ্যই চুলে হেয়ার ক্যাপ ব্যবহার করবেন। কারণ ক্লোরিনযুক্ত পুলের পানি কালার করা চুলের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
ঘন ঘন কালার করবেন না : একবার চুল কালার করার পর চার থেকে ছয় সপ্তাহ অপেক্ষা করুন। ঘন ঘন কালার করা চুলের জন্য ক্ষতিকর।
ময়শ্চারাইজার করুণ : চুলে আর্দ্রতা জোগানো জরুরি। এ জন্য নিয়মিত কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
চুলে পুষ্টি জোগান : কালার করার ইচ্ছা থাকলে কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই চুলের যত্ন নেয়া শুরু করুন। এ ছাড়া চুলে মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।
চিরুনি : মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন। এতে চুল ভাঙবে না। ব্রাশ ব্যবহার না করাই ভালো।
Posted ২:০১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২২ জুন ২০১৮
America News Agency (ANA) | Payel