প্রতিদিন আমরা যা খাচ্ছি, তা আপনার জন্য কতটুকু প্রয়োজনীয় বা আপনার বয়স ও শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী উপযোগী, তা ভেবেছেন কি? সঠিক বয়সে শরীরে সঠিক পুষ্টির জোগান দিতে পারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটু ভেঙে বলতে গেলে বয়ঃসন্ধি থেকে শুরু করে পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়স পর্যন্ত শরীরে প্রয়োজনীয় খাদ্যপুষ্টিও জোগান দিতে হবে। শরীর ও মানসিক অবস্থা পাল্টায় বয়সভেদে। এসব পরিবর্তন সামলে নিতে এবং সুস্থ-সুন্দর থাকতে বয়স অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করতে হবে।
বয়স ১০-১৮ পর্যন্ত কিশোরকাল। এ বয়স থেকে শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি হতে থাকে। সুন্দর ত্বক, চুল, স্বাস্থ্য ও বাহ্যিক গড়ন ঠিক রাখতে চাই প্রয়োজনীয় পুষ্টি। ভাবতে হবে হাড়ের স্বাস্থ্য আর শক্তির কথাও। খেতে হবে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। যাতে যোগ হবে তাজা সবজি, বাদাম ও ফলমূল। অনেকে দুধ খেতে পছন্দ করে না। সেক্ষেত্রে দুধে বিকল্প খুঁজে নিতে হবে। যেমন আমন্ড ও সয়া দুধ সপ্তাহে অন্তত তিনদিন খেতে হবে। এ বয়সে প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপাদনের জন্য স্বাস্থ্যকর ফ্যাট গ্রহণ জরুরি। তাই ওমেগা-৩ ফ্যাটযুক্ত মাছ খাওয়া আবশ্যক। তারুণ্য দীর্ঘদিন অটুট রাখতে এ সময় থেকেই ফাইবার ও জিংক গ্রহণ করতে হবে। ডিম ও মুরগির মাংসে জিংক রয়েছে। কৈশোরে ত্বকের সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে দাঁড়ায় ব্রণ, র্যাশ ও দাগ। তাই খাবারে পর্যাপ্ত ফল ও সবজির জোগান থাকতে হবে। এরপর বয়স ২০-এর পর থেকে যেহেতু পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার নিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়, তাই তখন চাই সুষম আহার। শারীরিক পরিশ্রম করলে ভিটামিন ‘বি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। মাশরুম, ডিম, সবুজ সবজি, বাঁধাকপি ও মাছ এসব খাবার পাতে রাখা জরুরি। ২০ বছরের নারীদের পর্যাপ্ত আয়রন জাতীয় খাবার খেতে হবে। কারণ পর্যাপ্ত আয়রন শরীরে না থাকলে মেনস্ট্রুয়েশনের সময় শরীর লৌহশূন্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। মসুর ডাল, বাদাম, মাছ ও গরুর মাংসে লোহা রয়েছে।
বয়স ২৫-৩০, এ সময়টা শারীরিক ধকলের পাশাপাশি মানসিক স্ট্রেসও নিতে হয় অনেক। তাই ডায়েটে রাখতে হবে ম্যাগনেশিয়ামপূর্ণ খাবার। শিম, ডার্ক চকোলেট ও পূর্ণ শস্য ম্যাগনেশিয়ামের ভাণ্ডার। এগুলো স্ট্রেস কমায়, মন ভালো রাখে ও কর্মোদ্যম রাখে। পাশাপাশি চিনি, চা ও কফির ওপর চাপ কমাতে হবে। এগুলো ম্যাগনেশিয়ামের কার্যকারিতা নষ্ট করে। নারীদের বেলায় এমন খাবার খেতে হবে, যা গর্ভধারণ ও সার্বিক সুস্থতার জন্য সহায়ক। ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ বাঁধাকপি, শাক, শিম, ও সাইট্রাস ফল খেতে হবে। প্রতিদিন অন্তত একবার ফল ও সবজি খাওয়া আবশ্যক।
এবার আসা যাক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। কারণ এ সময়টায় জীবনের মোড় নতুন করে ঘুরে যায়। জীবনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি সব নিয়ে হিসাব-নিকাশ চলে। যেতে হয় শারীরিক ও মানসিক স্ট্রেসের মধ্য দিয়ে। ধৈর্য ও শারীরিক শক্তি অনেকটাই নিভে আসে। কমতে থাকে মনোযোগও। তাই এ সময় খাদ্যতালিকায়ও ব্যাপক পরিবর্তন আসা সম্ভব। ৪০-এর পর সপ্তাহে অন্তত দুবার মাছ খান। ডায়েটে রুটি, ডিম, মটরশুঁটি ও মাংস রাখুন। স্ন্যাকস হিসেবে খেতে পারেন চীনাবাদাম। এসব খাবারের ‘বি’ ভিটামিন শক্তি ও মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। আর সবশেষে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে ভুলবেন না একেবারেই।
সূত্র: বেটার হেলথ
Posted ২:০৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০১৯
America News Agency (ANA) | Payel