এনা অনলাইন : | রবিবার, ১১ নভেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট | 630 বার পঠিত
বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা। বলিউডের অন্যসব তারকাদের চেয়ে অনেক দিক দিয়েই আলাদা তিনি। নেপালের শীর্ষস্থানীয় এক রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম। মিষ্টি হাসির অভিনয়ের জন্য নব্বই দশকের হাজার হাজার তরুণের স্বপ্নে নায়িকা ছিলেন তিনি। একসময় আক্রান্ত হন ক্যান্সারে। দীর্ঘ দিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে বিজয়ী হয়ে ফিরেছেন আপন ঘরে। শুরু করেন জীবনের নতুন ইনিংস। পর্দার বাইরেও অন্য এক মনীষা কৈরালাকে জানেন সবাই। একজন সামাজিক কর্মী হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিত তিনি। পরিচিত লেখক হিসেবেও। নিজের জীবনের সংগ্রাম নিয়ে লিখেছেন প্রথম গ্রন্থ ‘দ্য বুক অব আনটোল্ড স্টোরিজ’। বিশ্বের অন্যতম সাহিত্য উৎসব ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লিট ফেস্টে’র অতিথি হয়ে এ তারকা এখন ঢাকায়। শুনালেন তার জীবনের নানা গল্প।
বাংলাদেশে এসে কেমন লাগছে?
মনীষা কৈরালা: বাংলাদেশের এতো বড় একটা আয়োজনে আমাকে অতিথি করেছেন। এই জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। সাহিত্যের এতো বড় আসরে উপস্থিত হওয়া যে কোন লেখকের জন্যই আনন্দের। এখানে এসে আমার বই নিয়ে কথা বলছি। এটা আমার জন্য অন্য রকম ভালো লাগার।
ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে জিতেছেন। এর সবচেয়ে কঠিন পর্ব কোনটা ছিল?
মনীষা কৈরালা: আমার পরিবার, বিশেষ করে মা প্রতি পদক্ষেপে আমাকে সাহায্য করেছেন। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যেতাম, কান্নাকাটি করতাম। নিউ ইয়র্কে যখন চিকিৎসার জন্য ছিলাম, নিজের চোখে দেখেছি আমরা মানুষ কতটা একা! হতাশ হয়ে বসে থাকত। মনে মনে ঠিক করেছিলাম, নিজেকে এ ভাবে শেষ করব না। যদি মরতেই হয়, সাহসের সঙ্গে লড়াই করব। আমার চুল যখন পুরো উঠে গিয়েছিল, তখন আমি খুব ভেঙে পড়েছিলাম। মা বোঝাতেন যে, আমি নিজেই পারব নিজের সঙ্গে লড়াই করতে। হাল ছাড়িনি। তাই হয়তো এই লড়াইয়ে জিততে পারলাম।
‘দ্য বুক অব আনটোল্ড স্টোরিজ’ তো সেই জয়েরই একটা দলিল?
মনীষা কৈরালা: সেটা বলতে পারেন। তবে এটাতে আমি অনেক কিছু বলতে চেয়েছি। মানুষকে বলতে চেয়েছি হাল ছাড়া আমাদের কাজ নয়। আমাদের সংগ্রাম করতে হবে। চূড়ান্ত বিজয়ের জন্য। প্রতিটি কাজেই আমাদের লড়াই করে জিততে হয়। আমৃত্যু মানুষকে লড়াই করতেই হবে। আর এ জন্য আমাদের প্রাণবন্ত থাকাও বাঞ্চনীয়।
আপনার এই জয়ী হওয়াটা অনেকেই আপনার পূনজন্ম ভাবছেন?
মনীষা কৈরালা: পূনজন্ম শব্দটা আমার কাছে খুব একটা গুরুত্বের নয়। এটা নিয়ে ভাবিও না আমি। তবে কাছে সাহসী থাকা, প্রাণবন্ত থাকাটা জরুরী। জীবনের দুই পিঠই আমার দেখা। ভালো খারাপ দুটির সঙ্গে থেকেছি বলতে পারেন। জীবনের কঠিন সময়টাকে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি রাখিনি। আমি আমার মতো চলছি। থামছি না। থামতে চাইও না।
বলিউডে এখনও নারী শিল্পীরা তেমনভাবে সামনে আসতে পারছে না। নায়ক নির্ভরই থাকছে। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?
মনীষা কৈরালা: আপনি নারী-পুরুষের যে বিষয়টি জানতে চাইলেন এই বিভেধটা শুধু বলিউড নয়, সব ক্ষেত্রেই কিন্তু রয়েছে? খেয়াল করবেন, বাণিজ্যিক ও ভিন্নধারার ছবির মধ্যে আমরা আমাদের সময়ে অনেকটা সমতা রাখতে পেরেছিলাম। এক সময়ে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকও পেয়েছি আমরা। এখনও বলিউডে নায়কদের চেয়ে অনেক নায়িকারাই পারিশ্রমিক বেশি নিচ্ছেন। যারা ভালো করছেন তারা প্রাপ্যটা অবশ্যই পাবেন। এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বিভেদ-দেখিনা আমি।
আপনার কাজগুলোকো কীভাবে মূল্যায়ণ ও নির্বাচন করে থাকেন?
মনীষা কৈরালা: আমি যা করি ভালোবেসে করি। আমার প্রতিটি কাজের মাঝেই আমার অন্যরকম ভালোবাসা। আর চলচ্চিত্রের কাজ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমি গল্পটা আগে দেখি। এরপর আমার চরিত্র। পথ চলার রাস্তাটাও পরিমাপ করার চেষ্টা করি।
সূত্র: সমকাল
Posted ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১১ নভেম্বর ২০১৮
America News Agency (ANA) | Payel