যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা, ত্যাগের মহিমা ও যথাযোগ্য মর্যাদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে গত ৯ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। ঈদ উদ্্যাপনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, কানেক্টিকাট, ফিলাডেলফিয়া, ফ্লোরিডা, টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়াসহ মুসলিম-অধ্যুষিত সব স্টেটে ছিল ব্যাপক প্রস্তুতি। ঘরে ঘরে ছিল ঈদ আনন্দ। পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব এই ঈদ আনন্দে শরিক হন। করোনার পর এবারই ছিল সাধারণ সময়ের মতো ব্যাপক আয়োজন ও ঈদ উৎসব। গত দুই বছর কেউ কারো বাসায় তেমন একটা না গেলেও এবার অনেকেই বিভিন্ন বাসাবাড়িতে বেড়াতে যান।
নিউইয়র্কের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে ছিল বাড়তি আনন্দ। বেশির ভাগ মানুষ গ্রোসারিতে অর্ডার দিয়ে কোরবানি করেছেন। কেউ কেউ বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যরা মিলে ফার্মে গিয়ে গরু ও ছাগল কোরবানি করেছেন। নিউইয়র্ক সিটি থেকে অনেকেই আলবেনি, নিউজার্সির বিভিন্ন ফার্মে গরু, ছাগল, ভেড়া কোরবানি করেছেন। তবে নিউজার্সির একটি ফার্মে কোরবানি করা সম্ভব হয়নি। কারণ ওখানকার পুলিশ বিভাগ নোটিশ জারি করে কোরবানি বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। সেখান থেকে বেঙ্গল সোসাইটির এক নেতা বলেন, আমরা কোরবানি করতে গিয়েও করতে পারিনি। কারণ বলা হয়েছে, ওই খামারের পাশে এক বয়স্ক মহিলা থাকেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, তার পক্ষে পশু জবাই করার রক্ত সহ্য করা সম্ভব হয় না। তিনি হার্টের রোগী। তার অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ফলে আমরা কোরবানি দিতে পারিনি।
এদিকে ঈদের দিনে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদ নামাজ আদায় করেছেন এবং একে অপরের সাথে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। নিউইয়র্ক এবং এর আশপাশের বিভিন্ন স্টেটে মসজিদের ভেতরে এবং খোলা মাঠে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার করোনার বিধিনিষেধ তেমন না থাকায় ঈদ জামাতে মানুষের অংশগ্রহণ ছিল বেশি। মাস্ক ম্যান্ডেট না থাকলেও মাস্ক পরে গেছেন বেশির ভাগ মানুষ। জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে সবাই অজু করে ঈদের নামাজে গিয়েছেন। বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাতে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা ও শিশুদের জন্যও ঈদের নামাজের ব্যবস্থা ছিল। ঈদের দিন বৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে খোলা মাঠের পাশাপাশি মসজিদের ভেতরেও নামাজের ব্যবস্থা রাখা হয়। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বৃষ্টি থাকায় জেএমসি মসজিদ তাদের বাইরে খোলা মাঠে নামাজের আয়োজন বাতিল করে। তারা মসজিদের ভেতরে ও মসজিদের সামনের রাস্তায় নামাজের ব্যবস্থা করে।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের (জেএমসি) উদ্যোগে ১৬৫ স্ট্রিটের টমাস এডিসন হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ঈদুল আজহার বৃহৎ জামাত। তবে বৃষ্টির কারণে তা বাতিল করা হয়। সেখানে মসজিদে ও মসজিদের সামনে বিশেষ ব্যবস্থায় সকাল সাতটা, আটটা, নয়টা ও সকাল দশটায় চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নারী-পুরুষ সবাই ঈদের নামাজে অংশ নেন। ঈদের জামাতের অনুষ্ঠানে বয়ান করেন ও জামাত পরিচালনা করেন জেএমসির প্রধান খতিব মাওলানা আবু জাফর বেগ। তার সঙ্গে ছিলেন ইমাম শামসে আলী ও ইমাম মুজাহিদুল ইসলাম। নামাজের আগে জেএমসির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ডা. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আফতাব মান্নান বক্তব্য দেন। নামাজের সমন্বয় করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, সেবুল উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন।
সেখানে নামাজের জন্য আগেই নিউইয়র্র্ক সিটি পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়।
আল ফোরকান মসজিদ ইন ওজন পার্কে (৭৬-১৮, গ্ল্যানমোর অ্যাভিনিউ) মসজিদের সামনে ঈদের জামাতের ব্যবস্থা করা হয়। মসজিদ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত সভাপতি বদরুল হোসেন খান বলেন, এই মসজিদে দুটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমটি অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে সাতটায় আর দ্বিতীয়টি সকাল সাড়ে আটটায়। এখানে কেবল পুরুষদের নামাজের ব্যবস্থা ছিল। মুসল্লিরা জায়নামাজ ও মাস্ক সঙ্গে নিয়ে আসেন।
কুইন্সের ইক্না মসজিদে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমটি সকাল আটটায় আর দ্বিতীয়টি সকাল নয়টায় অনুষ্ঠিত হয়। ইক্না মসজিদে নারী-পুরুষের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা ছিল। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ সেখানে নামাজ আদায় করেন। অন্যবার খোলা রাস্তায় নামাজের ব্যবস্থা করা হলেও এবার সেখানে নির্মাণাধীন ভবনের কাজ চলায় মসজিদের সামনে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
জ্যামাইকার দারুস সালাম মসজিদে একাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের জন্যও নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। চারটি জামাতের মধ্যে প্রথমটি সকাল সাড়ে সাতটায়, দ্বিতীয়টি সকাল সাড়ে আটটায়, তৃতীয়টি সকাল সাড়ে নয়টায় এবং চতুর্থটি সকাল সাড়ে দশটায় অনুষ্ঠিত হয়। দারুস সালাম মসজিদে নবনির্মিত ভবনে নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কেবল প্রথম জামাতে পুরুষেরা নামাজে অংশ নেন। বাকি তিনটি নামাজে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারা অংশ নেন।
এস্টোরিয়ার আল আমিন জামে মসজিদ অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টারের সামনে খোলা ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এটি ৩৬ স্ট্রিটে (৩৬ অ্যাভিনিউ ও ৩৭ অ্যাভিনিউর মাঝে) অবস্থিত। সকাল আটটায় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নামাজে অংশগ্রহণকারীদের মাস্ক ও জায়নামাজ সাথে নিয়ে আসতে। সেই অনুযায়ী মুসল্লিরা জায়নামাজ ও মাস্ক নিয়ে যান।
আরাফা ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগ সুসান বি এন্থনি স্কুলের মাঠে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের জামাত একটি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা ও শিশুদের জন্যও নামাজের বিশেষ ব্যবস্থা ছিল। সেন্টারের সেক্রেটারি খন্দকার তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরা বিশাল পরিসরে সুসান বি এন্থনি স্কুলের মাঠে নামাজের ব্যবস্থা করি। মহিলাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে প্রতিবছরের মতো এবারও বাচ্চাদের জন্য কটন ক্যান্ডি, বেলুন, মিষ্টিসহ বিভিন্ন উপহার ছিল।
ইস্ট এলমহার্স্ট জামে মসজিদ অ্যান্ড মুসলিম সেন্টারে খোলা মাঠে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আবু লেইস জানান, মসজিদ কর্তৃপক্ষের নিয়মকানুন মেনে নামাজ আদায় করা হয়।
নিউইয়র্ক ঈদগাহর ১১ বছর পূর্তি উপলক্ষে জ্যাকসন হাইটস মোহাম্মদী সেন্টার এবারের ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাতের আয়োজন করে। ইমাম মাওলানা কাজী কাইয়ূমের নেতৃত্বে জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় ঈদের প্রথম জামাত সকাল সাড়ে ছয়টায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল সাড়ে সাতটায়, তৃতীয় জামাত সকাল সাড়ে আটটায়, চতুর্থ জামাত সকাল সাড়ে নয়টায় এবং সকাল সাড়ে ১০টায় শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। পুরুষদের পাশাপাশি নারী-শিশুদের জন্যও নামাজের ব্যবস্থা ছিল। প্রতিটি জামাতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসল্লির সমাগম ঘটে। নিউইয়র্ক ঈদগাহর পক্ষ থেকে ইমাম কাজী কাইয়্যূম মুসল্লিদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, প্রতিটি জামাতে ৫০০ মানুষের নামাজের ব্যবস্থা ছিল। ১১৫ লোকাল প্রিসেন্ট এখানে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। নামাজে সবাই মাস্ক পরে এবং জায়নামাজ নিয়ে আসেন। প্রতিটি জামাতের খুতবা শেষে বিশ্ব মানবতার কল্যাণ ও বিশ্ব শান্তির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ ছাড়া মোহম্মদী সেন্টারের উদ্যোগে ঈদের পরের দিন বিকেল চারটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত কোরবানির মাংস সংগ্রহ করা হয় এবং যারা কোরবানি দেননি, তাদের মধ্যে সন্ধ্যা সাতটা থেকে তা বিতরণ করা হয়।
জ্যাকসন হাইটসের ৭২ স্ট্রিটে (বিটুইন, ব্রডওয়ে এবং ৩৭ অ্যাভিনিউ) আন-নূর মসজিদের উদ্যোগে আল নূর কালচারাল সেন্টারের আয়োজনে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত হয় সকাল সাড়ে সাতটায় আর দ্বিতীয়টি হয় সকাল সাড়ে নয়টায়। নারী, পুরুষ, শিশু সবার জন্য নামাজের ব্যবস্থা ছিল। পাশাপাশি শিশুদের জন্য ছিল ঈদ উপহার। শিশুরা উপহার পেয়ে খুশি।
দারুল উলুম নিউইয়র্কের আয়োজনে মসজিদের ভেতরে এবং সামনের খোলা স্থানে সকাল সাতটায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রঙ্কসের বায়তুল ইসলাম মসজিদ অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারের উদ্যোগে মসজিদের ভেতরে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ইমাম মাওলানা মাহবুবুর রহমান বলেন, সকাল আটটায় একটি এবং সকাল নয়টায় অপর জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
বায়তুল জান্নাহ জুমা মসজিদ অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারের উদ্যোগে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। একটি মসজিদের বাইরে খোলা মাঠে আর অন্যটি মসজিদের ভেতরে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত সকাল ছয়টায় এবং দ্বিতীয় জামাত সকাল নয়টায় অনুষ্ঠিত হয়। সেখানকার কর্মকর্তা মো. দিদারুল আলম বলেন, এখানে প্রথম জামাতে পাঁচ শতাধিক এবং দ্বিতীয় জামাতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ নামাজ আদায় করেন।
আমেরিকান মুসলিম সেন্টারের উদ্যোগে পারসন্সের ১৫০ স্ট্রিটের ৯০ অ্যাভিনিউতে মসজিদের ভেতরে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ছয়টায়। এরপর রুফুলস কিং থিমপার্কে আরো দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। একটি সকাল আটটায় অন্যটি সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়। সেখানকার পরিচালক ফয়সাল নেওয়াজ বলেন, এখানে মোট তিনটি জামাত হয়েছে। দুটি পার্কে আর একটি মসজিদে।
ব্রুকলিনে দারুল জান্নাহ মসজিদ অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টারের মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় মোট পাঁচটি। ৬ অ্যাভিনিউ সি ব্রুকলিন, চার্চ ম্যাকডোনাল্ড ও ব্রুকলিন মসজিদে সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে নয়টার মধ্যে এসব জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত সকাল ছয়টায়, দ্বিতীয় জামাত সাড়ে ছয়টায়, তৃতীয় জামাত সাতটায়, চতুর্থ জামাত আটটায় এবং শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল নয়টায়।
বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টার অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টারে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এখানে চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেন্টারের প্রেসিডেন্ট মোহম্মদ আবুল হাসেম বলেন, এখানে দুটি বড় জামাতের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশি আমেরিকানদের পাশাপাশি এখানে অন্যান্য কমিউনিটির মুসলমানরাও নামাজ পড়েন।
ব্রুকলিনের হজরত বেলাল মসজিদের ভবনে সকাল সাতটায়, সকাল আটটায় ও সকাল নয়টায় ঈদের মোট তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের মুফতি সৈয়দ আনসারুল করিম আজহারী বলেন, প্রায় এক হাজার মানুষ এখানে নামাজ আদায় করেন। ঈদের নামাজের পর এক ঘণ্টার ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান হয়। এতে সব বয়সী মানুষ অংশ নেন। শিশুদের বেলুন উপহার দেওয়া হয়।
এদিকে নিউ ইংল্যান্ডে বসবাসরত ইসলামিক কালচারাল সেন্টার অব মেডফোর্ড (আইসিসিএম) মসজিদের উদ্যোগে মেডফোর্ডের হরমেল স্টেডিয়ামে খোলা মাঠে সকাল আটটায় বাংলাদেশি আমেজে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন আইসিসিএম মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা আহসান ওয়ারিস। স্টেডিয়ামের বাইরে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা ছিল। বাচ্চাদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল। ব্রেকফাস্ট হিসেবে গরুর মাংস ও পরোটা পরিবেশন করা হয়।
মসজিদ আর রাইয়ান, মুনা সেন্টার অব জ্যামাইকায় ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমটি সকাল সাতটায় এবং দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে আটটায়। প্রথম জামাত পরিচালনা করেন খতিব শেখ আকিব চৌধুরী এবং দ্বিতীয় জামাত পরিচালনা করেন হারুন অর রশিদ।
ইসলামিক সেন্টার অব জ্যাকসন হাইটস ইনক-এর মসজিদ আবু হুরায়রার উদ্যোগে মসজিদের সামনে (জ্যাকসন হাইটসের ৮০ স্ট্রিট বিটুইন ৩০-৩১ অ্যাভিনিউ) ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল আটটায় ঈদের নামাজে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারা অংশ নেন।
ব্রঙ্কসে বাংলাবাজার জামে মসজিদের উদ্যোগে খোলা মাঠে পবিত্র ঈদুল আজহার দুটি বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের নিকটবর্তী খোলা মাঠে (পিএস ১০৬, ২১২০ সেন্ট রেমন্ডস অ্যাভিনিউ, ব্রঙ্কস, নিউইয়র্ক ১০৪৬২) সকাল সাড়ে সাতটায় এবং সকাল সাড়ে আটটায় জামায়াত দুটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন বাংলাবাজার জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ ইয়াহইয়া।
দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ বদরুল আলম। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মসজিদের সভাপতি ডা. আবদুস সবুর এবং ফান্ডরেজিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এন মজুমদার। তারা বাংলাবাজার জামে মসজিদের বহুতল ভবন তৈরির লক্ষ্যে মসজিদের জন্য ১.৫ মিলিয়ন ডলারের জায়গা ক্রয়ে সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মসজিদ কমিটির সহসভাপতি আলহাজ ইলিয়াস আলী, মো. আহসান রাসুল নাসির, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোতাসিম বিল্লাহ হোসেন তুষার, কোষাধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন, সহ-কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবু সাঈদ, কার্যকরী সদস্য মোহাম্মদ বখতিয়ার খোকন, শামীম উদ্দিন, ওয়ালিউর রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, সোহেল চৌধুরী ও আক্তার খান রাজু। উল্লেখ্য, কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক লালন আহমেদ বর্তমানে পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। নামাজে বাংলাবাজার জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ গিয়াস উদ্দিনের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং বিশ্ব মানবতার শান্তি কামনাসহ বাংলাদেশের বন্যার্তদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।
নিউইয়র্কের নর্থ ব্রঙ্কস জামে মসজিদের উদ্যোগে সকাল নয়টায় ব্রঙ্কসের ওভাল পার্কের খোলা মাঠে ঈদের বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ বিপুল সংখ্যক মুসল্লি ঈদ জামাতে অংশ নেন। নামাজে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মুসাদ্দেক আহমেদ। ঈদুল আজহার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য দেন মসজিদ কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা সৈয়দ জুবায়ের আহমেদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ ইকবাল হোসাইন। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মসজিদ কমিটির সভাপতি সৈয়দ জামিন আলী, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহ জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহবুব হুসেইন, সহ-কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহ আলম, কার্যকরী সদস্য সৈয়দ বসারত আলী, মাওলানা আতাউর রহমান, মাওলানা মোস্তফা কামাল, সৈয়দ রাহুল ইসলামসহ কমিটির সদস্যরা। নামাজ শেষে মুসলিম বিশ্বসহ সমগ্র মানবতার কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ মুসাদ্দেক আহমেদ।
পার্কচেস্টার জামে মসজিদে সকাল আটটা ও সকাল নয়টায় ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় জামাতে মহিলাদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ছিল। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা জুবাইর রাশিদ। দ্বিতীয় জামায়াতে ইমামতি করেন মৌলভী নূরুল ইসলাম।
আটলান্টিক সিটিতে ঈদুল আজহা উদযাপিত
আটলান্টিক সিটি থেকে সুব্রত চৌধুরী জানান, নিউজার্সির আটলান্টিক সিটিতে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ত্যাগের মহিমায় পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। গত ৯ জুলাই শনিবার সকালে আটলান্টিক সিটির বিভিন্ন মসজিদে প্রবাসী বাংলাদেশি আমেরিকান মুসলিম সম্প্রদায়সহ বিপুল সংখ্যক মুসলমান ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য সমবেত হন।
মসজিদ আল হেরা : আটলান্টিক সিটির ২৪২৬, আটলান্টিক অ্যাভিনিউর বাংলাদেশি আমেরিকানদের অর্থায়নে নির্মিত ও তাদের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত আল হেরা মসজিদে ঈদের জামাতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিমসহ অন্যান্য কমিউনিটির মুসলিমরাও অংশ নেন। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিম মহিলাও ঈদের জামাতে অংশ নেয়। ঈদের নামাজ আদায় শেষে খুতবা প্রদান করা হয়। দেশবাসী ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সুখ-সমৃদ্ধির জন্য দোয়া করা হয়। এখানে ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মসজিদ আল হেরার খতিব মুহাদ্দিস আজিম উদ্দিন। এখানে দুটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামিক সেন্টার অব আটলান্টিক সিটি : বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আটলান্টিক সিটির ১৬, উত্তর ফ্লোরিডা অ্যাভিনিউতে অবস্থিত বাংলাদেশি আমেরিকানদের দ্বারা পরিচালিত ইসলামিক সেন্টার অব আটলান্টিক সিটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদের অন্যতম বৃহত্তম জামাত। এখানে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। পুরুষদের পাশাপাশি নামাজের জন্য ভিন্ন ব্যবস্থা থাকায় বিপুল সংখ্যক মহিলাও এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন। ঈদ জামাতে ইমামতি করেন মওলানা আব্দুর রহমান আল মাদানি।
জিম হুইলান বোর্ডওয়াক হল : আটলান্টিক সিটির ২৩০১ বোর্ডওয়াকে অবস্থিত ‘জিম হুইলান বোর্ডওয়াক হল’-এ বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন শেখ মুআদ। এখানে মহিলাদের ঈদের নামাজ আদায়ের সুব্যবস্থা থাকায় বিপুল সংখ্যক মহিলা ঈদ জামাতে অংশ নেন। এ ছাড়া আটলান্টিক সিটির মসজিদ মুহাম্মদসহ অন্যান্য মসজিদেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। আটলান্টিক সিটি-সংলগ্ন এগ হারবার টাউনশিপ, এবসিকন, গ্যালাওয়ে, নর্থফিল্ডসহ অন্যান্য শহরে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিমরা তাদের সুবিধাজনক স্থানে ঈদের নামাজ আদায় করেন। ঈদের নামাজ আদায় শেষে ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জীবিত হয়ে মুসল্লিরা পরস্পরের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
Posted ৮:৩৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৩ জুলাই ২০২২
America News Agency (ANA) | ANA