ঈদুল ফিতরের আগের সন্ধ্যায় আকাশে যে চাঁদ উঁকি দেয় তা দেখে মনের আকাশে উৎসবের ফল্গুধারা বয়ে যায়। যার রেশ চলে গভীর রাত পর্যন্ত, আর যে রাতের উপমা চাঁদ রাত। এই রাতে মেহেদীর রঙে হাত রাঙিয়ে যেমন উৎসবের সূচনা হয়, তেমনি রীতি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের আবহে এই রাতও ঈদের আনন্দকে বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের রাতটি এখন আর হাতে মেহেদী লাগানোর মধ্যেও সীমাবদ্ধ নেই। এটিও দিনে দিনে পরিণত হচ্ছে বড় উৎসবে। চাঁদ রাতকে এখন জমকালো করে উদযাপন করার নজির সৃষ্টি হয়েছে, কী দেশে প্রবাসে।
নিউইয়র্কেও এবার চাঁদ রাত উদযাপনে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রবাসী বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের, ৭৩ স্ট্রিট, জ্যামাইকার হিলসাইড অ্যাভিনিউ এবং ব্রঙ্কসের স্টারলিং বাংলাবাজার এলাকায় প্রতিবছর চাঁদ রাতে বিভিন্ন আয়োজন চলছে। রোজা ২৯টি হলে পবিত্র ঈদুল ফিতর ১ মে রোববার। রোজা ৩০টি হলে ঈদ ২ মে সোমবার। অর্থাৎ সবকিছু নির্ভর করছে চাঁদ দেখার ওপর। নিউইয়র্কের সামাজিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন ‘জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’ চাঁদ রাত উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের আয়োজনের মধ্যে রয়েছে ৭৩ স্ট্রিটে ওপেন এয়ার কনসার্ট। নিউইয়র্কের জনপ্রিয় শিল্পী কামরুজ্জামান বকুল, শাহ মাহবুব, আফতাব জনি, নীলিমা শশী, আমানত হোসেন আমান, তৃণিয়া হাসান, ডা. কামরুল ইসলাম, রোজী আজাদ, আলভান মিতু প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করবেন সোনিয়া।
জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’র সভাপতি সাকিল মিয়া জানান, চাঁদ রাতকে আনন্দময় করতে যেসব অনুষ্ঠান রয়েছে সেসব অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করা হয়েছে যথাক্রমে দেওয়ান মনির ও মিয়া মো. দুলালকে। প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পেয়েছেন সারওয়ার খান বাবু।
জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’র সাধারণ সম্পাদক মো. আলম নমি জানান, চাঁদ রাত বিরাট এক উৎসবে পরিণহ হয়েছে প্রবাসীদের জীবনে। দিন দিন এর কদর বাড়ছে। ঈদের আনন্দকে পরিপূর্ণ উপভোগ করতে এখন চাঁদ রাত উদযাপন যেন বড় রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। আর এর প্রমাণও মিলছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি ও মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায়। জ্যাকসন হাইটসে চাঁদরাতে নতুন সংযোজন হয়েছে আতশবাজির তীব্র ঝলকানি। পুরো এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত চলবে এ উৎসব।
মো. আলম নমি জানান, চাঁদ রাতে নারীরা হাতে মেহেদী লাগান। জ্যাকসন হাইটস এলাকায় চাঁদ রাতে এটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
এদিকে জ্যামাইকার হিলসাইড অ্যাভিনিউ ও ১৬৮ স্ট্রিটে প্রতি বছর সাড়ম্বরে চাঁদ রাত উদযাপন করা হয়। জ্যামাইকার বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে থাকে নানা আয়োজন।
কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার আহনাফ আলম জানান, হিলাসাইড অ্যাভিনিউর চাঁদ রাত উদযাপনের জন্য স্থানীয় প্রিসিঙ্কটের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রঙ্কসের স্টারলিং বাংলাবাজার এলাকায় চাঁদ রাতে থাকবে নানা আয়োজন।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন হৃদয়ে বাংলাদেশ-এর সভাপতি সাঈদুর রহমান লিংকন জানান, গত চার বছর ধরে বাংলাবাজার এলাকায় চাঁদরাত উদযাপন করা হচ্ছে। এ বছর আরো বড়ো পরিসরে চাঁদ রাত উদযাপন করা হবে। তিনি জানান, বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস (বাফা), বাংলাবাজার বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন, খলিল বিরিয়ানী, সংস্কৃতিকর্মী ও কবি মাকসুদা আহমেদসহ কমিউনিটির বেশকয়েকজন ব্যক্তি চাঁদরাত উদযাপনের অন্যতম আয়োজক।
Posted ৮:২৫ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল ২০২২
America News Agency (ANA) | ANA