ইতিহাসের বিভীষিকাময় দুনিয়া কাঁপানো নাইন ইলেভেন শনিবার। দুদশক আগে টুইন টাওয়ারসহ চারটি স্থানে ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় আল কায়দা। হামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।
এতে তালেবান সরকারের পতন হয়। ২০ বছর পর আফগানিস্তান আবারও তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দু’দশক পর তালেবানের এমন উত্থান আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং মানবাধিকারের বিষয়কে নতুনভাবে ভাবিয়ে তুলছে।
২০০১’র ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার ঘটনার ভয়াবহতায় চমকে গিয়েছিল পুরো বিশ্ব। যা পুরো পৃথিবীর রাজনৈতিক ও সামরিক নিরাপত্তার ধারণা পাল্টে দিয়েছে। ভয়াবহ ওই হামলায় ৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন।
হামলার মূল পরিকল্পনাকারী চিহ্নিত হন আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন। সে সময়ের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিতে না চাইলে আফগানিস্তানে হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী।
যুদ্ধের প্রথম দুমাসেই তালেবান সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। ২০১১ সালে পাকিস্তানে মার্কিন অভিযানে ওসামা বিন লাদেন নিহত হন। আল-কায়েদা ও তালেবান নির্মূলে আফগানিস্তানে যুদ্ধ চলতে থাকে। তালেবানও পাল্টা জবাব দেয়। ২০১৮ সালে পুরো বিশ্বকে পূর্ণ অস্তিত্ব জানান দেয় তালেবান। একের পর এক আত্মঘাতী হামলা, গাড়িবোমা হামলা এবং অন্যান্য হামলা চালাতে শুরু করে।
২০১৮ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের শর্তে দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসে তালেবান। এরপর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শান্তি চুক্তিতে সই করে। চুক্তি মেনে যুক্তরাষ্ট্র সব সৈন্য প্রত্যাহারে রাজি হয়।
চলতি বছরের মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৩১ আগস্টের মধ্যে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এরপর থেকেই তালেবানরা আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশ দখলে নিতে থাকে। শেষ পর্যন্ত গত ১৫ আগস্ট তালেবানের হাতে কাবুলের পতন ঘটে। সময়সীমার আগেই ৩০ আগস্ট সব শেষ মার্কিন বিমান কাবুল বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। আর এর মাধ্যমেই আফগানিস্তান অভিযানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র, শেষ হয় মার্কিন অধ্যায়।
সম্প্রতি টুইন টাওয়ারে হামলার সঙ্গে ওসামা বিন লাদেনের জড়িত না থাকার দাবি করেছে তালেবান। আর এফবিআইকে হামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একই সাথে ১৭ মাস পর হামলার মূল পরিকল্পনাকারী খালিদ মোহাম্মদসহ ৫ জনের বিচার আবার শুরু হয়েছে।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যোগ হয়েছে নতুন শঙ্কা। তালেবানের উত্থানের ফলে কোন দিকে ধাবিত হতে পারে আগামীর আফগানিস্তান, মানবাধিকার, আঞ্চলিক ও বিশ্বরাজনীতি পরিস্থিতি, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
Posted ৭:১১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
America News Agency (ANA) | ANA